ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় গত ৩ মাসে চায়না দোয়াড়ি জালের বিরুদ্ধে ১১টি অভিযান ও ১টি জরিমানা করেছে উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এরপরও লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না অসাধু ব্যবহারকারীদের। ফলে জলাশয় থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
জানা যায়, ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কোটচাঁদপুর উপজেলায় মোট জলাশয়ের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৭৩৪ হেক্টর। এর মধ্যে পুকুর ৫২৭ হেক্টর, বিল ৪৩ হেক্টর এবং বাওড় ৫১২ হেক্টর। এসব জলাশয়ে জন্ম নেয় বিভিন্ন দেশীয় মাছের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষাকারী সাপ, ব্যাঙসহ নানা প্রাণী।
অসাধু কিছু মাছ শিকারি এসব জলাশয়ে চায়না দোয়াড়ি ব্যবহার করছেন। এতে ধরা পড়ছে ধানী থেকে মা মাছ পর্যন্ত সব মাছই। শুধু মাছই নয়, ধরা পড়ছে সাপ, ব্যাঙসহ পরিবেশের জন্য উপকারী প্রাণী। এতে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
তালসার গ্রামের আকিমুল ইসলাম বলেন, “আগে বৃষ্টির পানি নামলে সবাই দেশীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে মাছ ধরতে যেতেন, মাছও পাওয়া যেত প্রচুর। কিন্তু এখন চায়না দোয়াড়ির কারণে দেশীয় মাছের উৎপাদন কমে গেছে। যদি এখনই এ জাল ব্যবহার বন্ধ না করা যায়, তবে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছ শুধু চিড়িয়াখানায় খুঁজতে হবে।”
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীন ইসলাম বলেন, “চায়না দোয়াড়ি অত্যন্ত ক্ষতিকর জাল। এতে সব ধরনের মাছ ধরা পড়ে, ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। গেল ৩ মাসে ১১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং একটি দোকানিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফরহাদুর রেজা বলেন, “চোরের সংখ্যা যদি হয় ৫ হাজার, আর পুলিশের সংখ্যা মাত্র ৫ জন, তাহলে কি সব চোর ধরা সম্ভব? একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে একাধিক বিভাগের সমন্বয় প্রয়োজন, যা বেশ দুরুহ কাজ। তারপরও আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।”
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে