রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে কাপ্তাই হ্রদের পানি নিষ্কাশনের দাবিতে ক্ষোভ বেড়েছে। ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বটতলী-উগলছড়ি সড়কসহ বেশ কিছু গ্রাম ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে পানির নিচে। এ অবস্থায় প্রায় এক হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে উগলছড়ি সড়ক ও এফ ব্লক এলাকার একাধিক সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে। বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব লাইল্যাঘোনা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারও পানিবন্দী হয়ে আছে মাসের পর মাস। এতে স্থানীয়দের চলাচল, চিকিৎসা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ আদনান পলাশ জানান, “শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, পরিবারগুলো পানিবাহিত রোগে ভুগছে। ছোট শিশুদের পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয়ে অভিভাবকেরা সবসময় আতঙ্কে থাকেন। কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত নিষ্কাশন না করলে এই দুর্ভোগ কাটবে না।”
সিঙ্গিনালা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “বর্তমানে উগলছড়ি সড়কে যাতায়াতের জন্য নৌকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। নির্দিষ্ট নৌযান না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।”
স্থানীয় কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, “তিন বছর ধরে ধান চাষ করতে পারছি না। বর্ষায় অতিরিক্ত পানি আর শীতে পানি সংকটের কারণে কৃষিকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি ও খাদ্যসংকটে পড়েছি।”
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ জানান, “প্রতি বছর অতিবৃষ্টি ও পাহাড় ক্ষয়ের ফলে কাচালং নদীসহ ছোট খালগুলোর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে। খালগুলো নিয়মিত খনন করা হলে আবাদি জমিতে চাষাবাদ করা সম্ভব হবে।”
বাঘাইছড়ির নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমেনা মারজান বলেন, “পানিবন্দী মানুষের ভোগান্তি অত্যন্ত দুঃখজনক। দ্রুত সমাধানের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে