AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
দেশে ফেরার পথে সর্বনাশা দুর্ঘটনা:

মা, স্ত্রী, সন্তানসহ সাত স্বজনকে হারালেন প্রবাসী বাহার


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
০৮:০৩ পিএম, ৬ আগস্ট, ২০২৫

মা, স্ত্রী, সন্তানসহ  সাত স্বজনকে হারালেন প্রবাসী বাহার

ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন আড়াই বছর পর দেশে ফিরছিলেন। ফেসবুকে লিখেছিলেন, "স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার"। কিন্তু সেই স্বপ্নের পথেই ঘটলো চরম বিপর্যয়—সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তার স্ত্রী, সন্তান, মা, নানি ও আরও তিন স্বজন।

বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জগদিশপুর এলাকায় মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে গেলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাহারকে আনতে গিয়েছিল তার পরিবার। 

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন ওমান প্রবাসী বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানি ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯) ও লামিয়া আক্তার (৮) এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)।

এ দুর্ঘটনায় প্রাণে রক্ষা পান বাহার উদ্দিন, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মির্জা, ভাবি সুইটি এবং শ্যালক রিয়াজ।

দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও চরম মানসিক বিপর্যয়ে আছেন বাহার উদ্দিন। তিনি জানান, গাড়িচালক রাসেল রাতভর না ঘুমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কুমিল্লায় একবার দুর্ঘটনার কাছাকাছি গিয়েও থামেননি। পরিবারের সদস্যরা বারবার অনুরোধ করেছিলেন একটু বিশ্রাম নিতে, কিন্তু চালক সে কথা শোনেননি। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি খালে ফেলে দেন।

বাহার জানান, পানি গাড়ির অর্ধেক ডুবিয়ে ফেললেও চালক গাড়ির লক খুলেননি। পরে কাচ নামিয়ে চালক নিজে পালিয়ে যান, কারও জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেননি।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা চেষ্টা করলেও গাড়ির ভিতর আটকে পড়া সাতজনকে জীবিত উদ্ধার সম্ভব হয়নি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় রেকারের মাধ্যমে গাড়িটি তোলা হয়।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মোবারক হোসেন ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছেন।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ বলেন, ডুবুরি না থাকায় উদ্ধারকাজে বিলম্ব হয়। চাঁদপুর থেকে ডুবুরি চাওয়া হলেও তার আগেই গাড়ি তোলা হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লী গ্রামে একসঙ্গে সাতটি মরদেহ পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো এলাকায়। প্রতিবেশী মো. গোফরান বলেন, “বাহার খুব ভালো ছেলে। তার আগমনের আনন্দে সবাই মিলে তাকে আনতে গিয়েছিল, এখন সবাই নিথর দেহ হয়ে ফিরলো।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই পরিবারটি প্রায় শেষ হয়ে গেল। একই সঙ্গে সাতটি কবর খোঁড়া হয় বাড়ির পাশেই। একটি স্বপ্নের দেশে ফেরা পরিণত হলো এক নির্মম ট্র্যাজেডিতে।

 

একুশে সংবাদ/ল.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!