ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে একমাত্র ছেলের আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন এক বাবা। ছেলের মৃত্যুতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। স্থানীয়দের সহানুভূতিতে চিকিৎসার চেষ্টা চললেও শেষ রক্ষা হয়নি।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিশ্রামপুর গোয়ালটুলি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন নূর হোসেন (৫২)। তিনি ওই গ্রামের মৃত বাহু মিয়ার ছেলে এবং পেশায় দিনমজুর ছিলেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে প্রেমঘটিত কারণে নূর হোসেনের একমাত্র ছেলে ইঁদুর মারার বিষ (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন নূর হোসেন। শারীরিক অবস্থারও অবনতি ঘটতে থাকে।
সম্প্রতি স্থানীয়রা চাঁদা তুলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুরে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদে তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা চাওয়া হয় এবং অনেকে সহযোগিতাও করেন। ঠিক পরদিনই রংপুরে নেওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই শুক্রবার রাতে নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নূর হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, “স্বামীর চিকিৎসার জন্য বাড়ির পাশে একজনের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি তিনি আত্মহত্যা করেছেন।”
নিহতের ছোট ভাই বেলাল হোসেন বলেন, “ভাইয়ের একমাত্র ছেলে আত্মহত্যা করার পর থেকেই তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। গতকালই তাকে রংপুরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।”
ভানোর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, “নূর হোসেন খুবই অসহায় ছিলেন। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর পর তিনি মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন। চিকিৎসার প্রস্তুতি চলছিল, কিন্তু তার আগেই তিনি আত্মহত্যা করলেন।”
বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, “পরিবার ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, নূর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
একুশে সংবাদ/ঠা.প্র/এ.জে