ময়মনসিংহের ভালুকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে না পারায় এক শিক্ষার্থীকে চলমান পরীক্ষার সময় কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে শিক্ষার্থীর অভিভাবককে মারধর করে গুরুতর আহত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার তামাট ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা. মিম আক্তার (১২) গত ৭ জুলাই (সোমবার) অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ফি পরিশোধ না করায় তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা।
পরিবারের দাবি অনুযায়ী, ওইদিন সকাল ৯টার দিকে মিম মাদ্রাসার কেরানি আব্দুল আওয়াল খানের কাছে পরীক্ষার ফি পরিশোধের জন্য গেলে তাকে সকাল ১০টায় আসতে বলা হয়। পরে সে পরীক্ষায় অংশ নিলে সাড়ে ১০টার দিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেয়।
ঘটনাটি জানতে পেরে শিক্ষার্থীর পিতা মো. মোশারফ হোসেন প্রতিবাদ জানাতে গেলে মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে তার ডান কানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানুজ্জামান সরকার জানান, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, ভিডিও করার কারণে শিক্ষার্থীর বাবার কাছ থেকে মোবাইলটি জোরপূর্বক আনা হয়েছে।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা মোশারফ হোসেনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ৯ জুলাই (বুধবার) তাকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর ওই ছাত্রীর চাচা মো. মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মো. হাসানুজ্জামান সরকার, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. রেজাউল, মো. বারেক মাষ্টার। তারা সকলেই মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারী হিসেবে কর্মরত।
এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে