সিরাজগঞ্জ জেলায় কয়েকদিন ধরে চলা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নদী তীরবর্তী ও শহরতলীর নিচু এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি জমে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। দিনমজুর, তাঁত শ্রমিক, ছোট দোকানদারসহ খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের চৌরাস্তা, বড়বাজার, নতুন ভাঙাবাড়ি, একডালা, হাটিকুমরুল এবং কামারখন্দ উপজেলার অনেক এলাকায় পানি জমে রাস্তাঘাট হাঁটার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শহরের ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতেও নেই বেচাকেনা। বরং দিনের পর দিন দোকান বন্ধ রেখে ঘরে বসে আছেন অনেকে।
বেলকুচি ও শাহজাদপুর উপজেলার তাঁত এলাকায় কথা হয় কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে। স্থানীয় তাঁত শ্রমিক মোছা. পারভীন বেগম জানান, গত ২-৩ দিন ধইরা কারখানায় কাজ নাই। রাস্তা কাদা, তাঁতঘরে পানি ঢুইছে। কাজ করতে পারতেছি না, আয় নাই, খাওয়া কষ্ট হইতাছে। তার স্বামীও একজন তাঁত শ্রমিক। দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
শহরের প্রেস ক্লাব নাজমুল চত্বরে পাশের রিকশচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই রকম গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সবসময়ে খারাপ। বড় বৃষ্টিতেও লোক ওঠে, কিন্তু গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে কেউ বের হয় না।
তিনি বলেন, আগেও এমন পরিস্থিতি হয়েছে, কিন্তু এবার যেন বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে গেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস, তবে বাস্তবে দেখা মিলছে না সহায়তার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনোয়ার হোসেন জানান, বৃষ্টিজনিত দুর্ভোগ নিরসনে আমরা প্রস্তুত আছি। নিচু এলাকা মনিটর করা হচ্ছে। প্রয়োজনে শুকনো খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।
স্থানীয় উন্নয়ন গবেষক অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জের মতো নদীবেষ্টিত এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা হয়নি। শহরের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের সড়কগুলো বছরের পর বছর সংস্কারের অপেক্ষায় থাকে। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে যায়।
একুশে সংবাদ/সি.প্র/এ.জে