গাজীপুরের শ্রীপুরে এক পরিবারের ১০ সদস্যের আট জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি নেতা অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্য বিষিয়ক সম্পাদক।
শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাব (হলাডিচালা) এলাকায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (জন্মান্ধ) পরিবারকে তিনি নতুন ঘর বুঝিয়ে দেন। এ সময় তিনি ওই পরিবারের আমির হোসেন এবং জাকির হোসেনের মা রাশিদা বেগমের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। রাশিদা বেগমই ওই পরিবারের একমাত্র সুস্থ আছেন।
এর আগে ঈদুল আজহার আগে শুক্রবার (৩ জুলাই) উজিলাব (হলাডিচালা) এলাকায় গিয়ে পরিবারটিকে দেখে আসেন তিনি। তিনি বলেন, আমি এসে দেখলাম একটা মাত্র ঘরে তারা কষ্ট করে বসবাস করছেন। তাই আমি একটি নতুন ঘর উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের সীমাবদ্ধতার মাঝেও পরিবারটিকে ভালো রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।
ওই পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা হলেন আমির হোসেন (৪০), জাকির হোসেন (৩০), বোন হাসিনা (৩৩) নাসরিন (৩০), আমীর হোসেনের স্ত্রী শিউলী আক্তারও একচোখে একেবারেই দেখতে পান না, তবে অপর চোখে অল্প দেখতে পান। হাসিনার ছেলে মারুফ (৪) এবং মেয়ে রূপা (১৬) জন্মান্ধ জাকির হোসেনের মেয়ে জোনাকি (১২)।
পরিবারের সদস্য জন্মান্ধ আমির হোসেন হাট বাজারে ঢোল বাজিয়ে যা উপার্জন করতেন তা দিয়েই চলত ৮ জনের সংসার। মাটির ঘরটি জীর্ণ, টিন ফুটো হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি ঝড়ে ঘরে পড়ে। একবারেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় টিনশেড বিল্ডিংয়ের দুইটি কক্ষে ১০ জনের পরিবারটি বসবাস করে আসছেন। পরিবারটির এমন অসহায়ত্বের কথা শুনে পাকা মেঝেসহ একটি টিনশেড ঘর তৈরি করে বুঝিয়ে দেন বিএনপির ওই নেতা।
জন্মান্ধ পরিবারের সদস্য জাকির হোসেন বলেন, আমাদের কাজ করার ইচ্ছে থাকলেও চোখে না দেখায় তা হয়ে উঠে না। একটি মাটির ঘরে বসবাস করতাম। পরিবারের সদস্য বাড়তে থাকায় একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়। মাটির ঘরের চালে টিন ফুটো হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি ঝড়ে। এতে ঘরটিতে বসবাস কার যায় না। এক জায়গাতে খাবার খেতে হতো, সেখানেই ঘুমানো লাগত। আবার কেউই চোখে দেখে না। সেখানে আমাদের থাকতে কষ্ট হতো।
প্রতিবেশী প্রকৌশলী সোহাগ হাসান বলেন, পরিবারটিতে জন্ম থেকেই ৮ জন প্রতিবন্ধী। বাড়ির পাশে থাকায় তাদের কষ্টগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছি। অনেক সময় খাবার সংকট থাকলে তা মেটানোর চেষ্টা করতাম। সবার সাহায্য সহযোগিতায় চলে তাদের সংসার। পরিবারটির একটি ঘরের খুব দরকার ছিল। আজ সেটা পূরণ হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোসলেহ উদ্দিন মৃধা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শ্রীপুর ইউজিসির সভাপতি এস এম মাহফুল হাসান হান্নান, জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী সোহাগ, দেলোয়ার হোসেন এবং আলমগীর হোসেনসহ বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে