কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের রামভদ্রা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর নির্মিত ভবনের পাশ ঘেঁষে মাটি কেটে ড্রেন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে করে যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একতলা ভবনটির।
ভুক্তভোগী প্রবাসী মো. বাবুল মিয়ার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশী আব্দুল মতিন ও তার ছেলে শাহাপরান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই মাটি কেটে ড্রেন তৈরি করেছেন। ফলে বর্ষায় পানি জমে ভবনের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিষয়টির মীমাংসায় স্থানীয় পঞ্চায়েত একাধিকবার বসলেও প্রতিপক্ষ শালিস মানতে নারাজ।
বাবুল মিয়ার স্ত্রী রেহেনা আক্তার ইতোমধ্যে তিতাস থানায় ও উপজেলা প্রশাসনে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল মতিন মিয়ার বাড়ির জমি থেকে মাটি কেটে সরাসরি বাবুল মিয়ার নির্মিত ভবনের পেছন ঘেঁষে একটি ড্রেন খনন করা হয়েছে। পরিবারটির দাবি, এতে বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের পানি ও বৃষ্টির পানি সরাসরি ভবনের গোড়ায় গিয়ে জমছে, যা ভবিষ্যতে ধ্বংসের আশঙ্কা তৈরি করছে।
বাবুল মিয়ার ছেলে রিয়াদ মুঠোফোনে বলেন, “আমার বাবা ও আমি প্রবাসে থাকি, বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। এখন আমাদের ভবন ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে। শাহাপরান হুমকি দিয়ে বলেছে, ভবন রক্ষা করতে হলে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।”
স্থানীয় সমাজসেবক হাজী মো. কামাল হোসেন ফকির বলেন, “গ্রামের পঞ্চায়েতরা কয়েকবার বসেছে, কিন্তু এক পক্ষ মানছে না বলে সমাধান সম্ভব হয়নি।”
বাবুল মিয়ার পরিবারের দাবি, “গ্রামের মাতবরদের উপস্থিতিতে সঠিক সার্ভে করে যদি প্রমাণ হয় তাদের ভবন প্রতিবেশীর জায়গায় গেছে, তাহলে আমরা নিজেরাই ভবনের সেই অংশ সরিয়ে নেবো। কিন্তু তারা কোনো নিয়ম মানছে না।”
অভিযুক্ত আব্দুল মতিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস বা স্থানীয় সিদ্ধান্তে মত দেওয়ার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমি পুলিশ বা সাংবাদিক কাউকে পরোয়া করি না।” পাশাপাশি নিজের জমিতে আরও মাটি কেটে পুকুর তৈরি করার হুমকিও দেন। তবে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এলাকাবাসী জানান, শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে একাধিকবার বৈঠক হলেও মতিন মিয়ার ছেলের উগ্র আচরণ ও অসহযোগিতার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি।
প্রবাসী পরিবারটি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলছে, “আমরা নিরুপায় হয়ে গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছি। ন্যায়বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।”
একুশে সংবাদ//র.ন