রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামে পাকা রাস্তা এখন কাদা মাটির কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে খননের মাটি রাস্তায় ফেলে রাখায় প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে এখন স্যান্ডেল খুলে হেঁটে চলতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
পুকুরের মালিক কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ী মুকুল এবং তার অংশীদারদের খামখেয়ালিপনার ফলে পুরো গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ভারি বর্ষণের মধ্যে রাস্তার উপর পড়ে থাকা কাদা মাটি পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় রিকশা, মোটরসাইকেল বা যেকোনো যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। একপর্যায়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, কাদা পরিষ্কারের নামে কোদাল দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করায় রাস্তায় থাকা খোয়া পাথরও উঠে যাচ্ছে, ফলে রাস্তার স্থায়িত্ব হুমকির মুখে।
কাচারিপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া ওই পাকা রাস্তাটির একপাশে রয়েছে সংশ্লিষ্ট পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ পাশে গাছ কাটা এবং ভেকু মেশিন দেখা গেছে, যদিও সেটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। পুকুরের কাদা মাটি বহনে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক্টর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। একজন শ্রমিক কোদাল দিয়ে রাস্তার কাদা পরিষ্কার করছিলেন, কিন্তু এতে রাস্তার পাথর উঠে যাচ্ছিল। এসময় শুরু হয় ভারি বৃষ্টি। অনেকেই স্যান্ডেল হাতে নিয়ে খালি পায়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “এখন বর্ষা মৌসুম চলছে। এই সময়ে পুকুর খনন ও মাটি বহন করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অযৌক্তিক। রাস্তা বসে গেছে, আর এই কাদায় পা ফসকে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।”
এক মোটরসাইকেলচালক জানান, “সকালে রাস্তা মোটামুটি ছিল, কিন্তু দুপুরের পর মোটরসাইকেল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। আলু ও ধান কাটা-মাড়াই চলছে, ফলে কৃষকদেরও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুকুর মালিক মুকুল গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও তুলেছেন গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওয়ার্ড মেম্বার রফিকুল ইসলাম জানান, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।”
পুকুর মালিক মুকুলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘রং নাম্বার’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে