ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের রহমান প্রামানিকের ডাঙ্গী গ্রামে নির্মাণাধীন ২০০ মিটার এইচবিবি (হ্যালো ব্লক বোল্ডার বেস) রাস্তায় অত্যন্ত নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার তলদেশে ফাঁকা করে দুই নম্বর ইট বিছিয়ে, তাতে কোনোভাবে কিছু ভরাট বালু ফেলে রাস্তার কাজ সম্পন্ন দেখানো হচ্ছে। এতে করে গ্রামবাসীর যাতায়াতের জন্য মেইন সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী এইচবিবি রাস্তা কার্যত কোনো উপকারে আসবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঢলের পানিতে কিংবা স্রোতের ধাক্কায় রাস্তাটি ভেঙে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
রবিবার রাস্তার পাশে বসবাসকারী শেখ ছুলাইমান (৪৫) বলেন, “দুই নম্বর আদলা ইট ফাঁকা ফাঁকা করে বিছিয়ে, যেভাবে বালু ফেলে রাস্তার কাজ দেখানো হচ্ছে, তাতে সরকারি বরাদ্দের অর্ধেক কাজও হচ্ছে না। এই রাস্তা আমাদের কোনো উপকারে আসবে না।”
তবে নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান `ওয়ালী কনস্ট্রাকশন`-এর স্বত্বাধিকারী কাজী বদরুজ্জামান বলেন, “রাস্তার ইটগুঁড়ো দুই নম্বর ইট—এটা আমি স্বীকার করছি। তবে এর চেয়ে ভালো ইট দিয়ে এলাকায় কোনো এইচবিবি রাস্তা নির্মাণ হয় না। এমনকি উপজেলায় বড় বড় প্রকল্পের কাজেও এই ধরনের ইট ব্যবহৃত হয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, পদ্মা পাড়ের জনগোষ্ঠীর যাতায়াতব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এলজিইডির অধীনে গাজীরটেক ইউনিয়নের রহমান প্রামানিকের ডাঙ্গী গ্রামে শেখ ফিরোজের বাড়ি থেকে কাজেম মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত ২০০ মিটার (৩১০ ফুট) এইচবিবি রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজটি পান সদরপুর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান `ওয়ালী কনস্ট্রাকশন`।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার কাজী বদরুজ্জামান ঈদুল আজহার ১০ দিনের সরকারি ছুটির সময় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে তড়িঘড়ি করে রাস্তার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন বলেন, “আমি ঈদের ছুটিতে থাকায় ওই রাস্তা পরিদর্শনে যেতে পারিনি। তবে এইচবিবি রাস্তায় দুই নম্বর ইট ব্যবহারের কথা নয়।”
একই দিন উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস ছাত্তার বলেন, “নির্মাণাধীন রাস্তার বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। ভাই, আপনার কাছে যদি রাস্তায় ব্যবহৃত ইটের ছবি থাকে, তাহলে আমার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিন।”
এ অবস্থায় প্রতিবেদক সংশ্লিষ্ট রাস্তার নিম্নমানের সামগ্রীর ২৮টি স্থিরচিত্র এবং ৫টি ভিডিওচিত্র উপজেলা প্রকৌশলীর মোবাইল নম্বরে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ/ফ.প্র/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
