বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুসলমানদের মতোই হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ আজ দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চা করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক-সামাজিক অঙ্গনের কিছু ব্যতিক্রমধর্মী মন্তব্য এলেও বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
বুধবার (১১ জুন ২০২৫) মোংলা উপজেলার দিগরাজ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ কারো একার নয়, এ দেশ হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান—সকলের। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই চিত্র আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরলে তা হবে গর্বের বিষয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন,“বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার আছে এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি, সব সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। এই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সব সম্প্রদায়ের লোকজন আজ নিজেদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন এবং স্বাচ্ছন্দ্যে রয়েছে। এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় অর্জন।”
বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম বলেন, “দেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুদের ওপর সরাসরি কোনো দমন-পীড়নের প্রমাণ নেই। বরং তারা নিজ নিজ ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার ভোগ করছেন, যা বাংলাদেশকে একটি আলোকিত সমাজ হিসেবে তুলে ধরছে।”
মোংলা ও রামপালের হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারাও বলেন, তারা সামাজিকভাবে এখন অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন।
হিন্দু কল্যাণ ফ্রন্টের নেতা প্রদীপ বসু সন্তু বলেন,“আমরা আজ মন্দিরে পূজা দিতে পারছি, জমির ওপর মালিকানা পাচ্ছি, প্রশাসনের সহযোগিতাও পাচ্ছি। এটা ইতিবাচক দিক।”
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি শীমুল চন্দ্র রায় বলেন,“আমরা কারো অনুগ্রহ চাই না, চাই সাংবিধানিক অধিকার। আর সেই অধিকার আমরা আজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাচ্ছি। সরকার, প্রশাসন ও প্রতিবেশীদের সহায়তায় আমরা শান্তিতে বাস করছি।”
বক্তারা আরও বলেন, ধর্ম যার যার, কিন্তু রাষ্ট্র সবার। ধর্মীয় সম্প্রদায় ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশ হবে আরও সমৃদ্ধ ও মানবিক রাষ্ট্র।
সমাবেশ শেষে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রামপাল-মোংলা এলাকা।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে