পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে রেখে চাঁদপুরের সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী সফরমালী পশুর হাট জমে উঠেছে। প্রায় ৪০ বছর ধরে সপ্তাহের প্রতি সোমবার বসা এই হাটে এখন কোরবানির পশুর কেনাবেচায় ব্যস্ততা দেখা দিয়েছে।
চাঁদপুর ছাড়াও শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলা থেকে বেপারী, খামারি ও গৃহস্থরা গরু-ছাগল নিয়ে এ হাটে অংশ নিচ্ছেন। ফলে সপ্তাহব্যাপী এই হাট এখন পরিণত হয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার এক মিলনমেলায়। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে জনসমাগম।
এখনো ঈদের বাকি রয়েছে প্রায় ১০–১২ দিন। তাই হাটে গরু প্রচুর দেখা গেলেও বিক্রি তুলনামূলক কম—এমন মন্তব্য করেছেন অনেক খামারি। শরীয়তপুর থেকে আসা খামারি তসলিম মিয়া বলেন,“এবার ১০টি গরু এনেছি, এখনো ৯টি রয়ে গেছে। আশা করছি ঈদের আগের কয়েক দিনে সব বিক্রি হয়ে যাবে।”
হাটে গরু কিনতে আসা ক্রেতা সায়েম পাটোয়ারী জানান,“আমরা কয়েক বছর ধরে এখান থেকেই কোরবানির গরু কিনি। এবার গরু আছে প্রচুর, তবে দাম কিছুটা বেশি।”
একজন নিয়মিত ক্রেতা বলেন,“বাবার হাত ধরে ছোটবেলা থেকে এখানে আসি। হাটের ভেতরে শৃঙ্খলা ভালো, তবে বাইরের পরিবেশে কিছুটা বিশৃঙ্খলা রয়েছে। কিশোররা মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের নামে জোর করে টাকা নিচ্ছে।”
হাটের পরিচালক মো. আজিজ খান জানান,“হাটের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এবার গরু প্রতি মাত্র ৬০০ টাকা হাসিল নিচ্ছি, যা অন্য হাটের তুলনায় কম।”
সফরমালী বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ খান দুদু জানান,“এটি মূলত পারিবারিক বাজার। হাটের আয় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন দাতব্য খাতে ব্যয় করা হয়।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার চাঁদপুর জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬২ হাজার ৯৮টি পশু, যেখানে চাহিদা ৭৬ হাজার। এতে আনুমানিক ১৪ হাজার পশুর ঘাটতি থাকতে পারে। তবে পাশের জেলার পশু যোগ হলে সংকট হবে না বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ / চাঁ.প্র/এ.জে