অভাবের তাড়নায় ২৭ বছর আগে ২ শিশুপুত্র নিয়ে নিজ জেলা লালমনিরহাট ছেড়ে ঢাকায় আসেন আনিছুর ও মর্জিনা দম্পতি। সাভারের বলিয়াপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। জীবিকার তাগিদে পায়ে চালিত ভ্যানগাড়ি সম্বল করে মানিকগঞ্জ ও সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ঝোপঝাড় ও রাস্তার পাশ থেকে আদাইড়া কচুশাক ও খারকোন শাক সংগ্রহ করেন।
সংগৃহীত ওই শাক বিক্রি করেন মিরপুর ১ নম্বর কাঁচা বাজারে। এতে প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকা আয় হয় বলে তারা জানান । কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের এ কর্মযজ্ঞ। সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ মিটিয়ে জমিয়ে ছিলেন বিশ লক্ষাধিক টাকা । যা পুত্রবধূ ও নাতির চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন। এছাড়া জমানো টাকা দিয়ে দেশের বাড়িতে কিনেছেন ২৮ শতাংশ জমি। স্বপ্ন এখন আরো ৪-৫ বছর এ ব্যবসা করে ৫ রুমের একটি বিল্ডিং করে বাকী জীবনটা স্বাচ্ছন্দ্যে কাটানোর।
বুধবার দুপুরে জয়মণ্টপ ইউনিয়নের কমলনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে কথা হয় ওই দম্পতির সাথে । তারা জানান, ২৭ বছর আগে এই শাক কচু বিক্রি শুরু করি । এখনো করছি। এই ব্যবসায় কারো কটু কথা শুনতে হয় না। বিক্রিতে বাকি যায় না । মানিকগঞ্জ ও সিংগাইরের বিভিন্ন এলাকায় কচুশাক কুঁড়িয়ে থাকি। শাক বিক্রির টাকায় ২৮ শতাংশ জমি কিনেছি। বড় ছেলেকে বিয়ে পাশ এবং ছোট ছেলে ও মেয়েকে কোরআনে হাফেজ বানিয়েছি। এখন ৫ রুমের একটা বিল্ডিং করতে পারলে কচু শাকের ব্যবসা আর করবেন না বলেও জানান আনিছুর দম্পতি।
তাদের মতো আরও ১৪-১৫টি পরিবার প্রতিদিন সিংগাইর থেকে বিনা পুঁজিতে শাক সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকায় বিক্রি করেন বলেও তারা জানান।
একুশে সংবাদ / মা.প্র/এ.জে