মোংলা বন্দরের যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগে দীর্ঘ এক দশক ধরে বিধিবহির্ভূতভাবে `মেকানিক কাম অপারেটর ইনচার্জ` হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মো. সোবহান মোল্লা। অথচ তার প্রকৃত পদবি এখনও ‘অপারেটর’। তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ ১০-১২ জন কর্মকর্তা থাকলেও তাদের উপেক্ষা করে এককভাবে ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তিনি। এতে বিভাগজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ, অসন্তোষ ও বিভ্রান্তি।
সূত্র জানায়, মো. সোবহান মোল্লা কোনো নিয়মিত পদোন্নতি ছাড়াই ইনচার্জের দায়িত্বে বহাল রয়েছেন। সরকারি চাকরি বিধিমালার আলোকে ‘অপারেটর’ পদ থেকে সরাসরি ‘মেকানিক কাম অপারেটর ইনচার্জ’ হওয়া সম্ভব নয়। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিভাগটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কারও পদোন্নতি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের পাশ কাটিয়ে একজন জুনিয়র কর্মকর্তাকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে বিভাগের মধ্যে নৈতিকতা, জবাবদিহিতা ও প্রাপ্যতার জায়গায় চরম অনিয়ম চলছে।’
জানা গেছে, বর্তমানে ‘মেকানিক কাম অপারেটর ইনচার্জ’ পদে চারটি শূন্যপদ থাকলেও সেগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে নিয়োগ না দিয়ে এককভাবে দায়িত্ব পালন করছেন সোবহান মোল্লা। এতে প্রশাসনিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়মনীতি ও জ্যেষ্ঠতার ধারাকে উপেক্ষা করে কোনো কর্মচারীকে বছরের পর বছর একটি দায়িত্বে বহাল রাখা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এতে কর্মীদের মধ্যে বৈষম্য ও হতাশা তৈরি হয়, যা ভবিষ্যতে কর্মসংস্কৃতি এবং প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ব্যাপারে যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগের কর্মরত্ন মো. সোবাহান মোল্লার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে, তিনি বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে এড়িয়ে যান। তিনি আরো উল্টো অভিযোগ করে বলেন, যারা এখানে চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন তাদের মধ্য কারো কারো তিন থেকে চার বছর এবং কারো কারো দশ বছর চাকরি করার বয়স হয়েছে। পক্ষান্তরে এখানে দীর্ঘ ৩০ বছর চাকরির বয়স। সে ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার তালিকায় আমার নামই থাকা দরকার। এ ব্যাপারে আদালতে একটি রিট পিটিকশন করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।
এ বিষয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
একুশে সংবাদ/ বা.প্র /এ.জে