AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ময়লার ভাগাড়ে স্বাগত-বিদায় জানায় হাজীগঞ্জ পৌরসভা



ময়লার ভাগাড়ে স্বাগত-বিদায় জানায় হাজীগঞ্জ পৌরসভা

দেশের প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা হলো চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভা। ২০.২৪ বর্গ কিলোমিটারের এই পৌরসভায় স্বাগত ও বিদায় জানায় ময়লার ভাগাড়। সড়কের পাশে ময়লায় একাকার হয়ে আছে। মানুষ নাক চেপে চলাচল করছে। দুর্গন্ধে পরিবহন গাড়ির জানালা ও দরজা বন্ধ রাখা হচ্ছে। গাড়ির যাত্রীরা নাক চেপে চলাচল করছেন।


চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কের হাজীগঞ্জ পৌর সীমান্তে দেখা মিলবে একটি তোরণ। সেখানে লেখা রয়েছে ‘স্বাগত হাজীগঞ্জ পৌরসভা’। এদিকে হাজীগঞ্জ থেকে কচুয়া যাওয়ার পথে লেখা রয়েছে- ‘ধন্যবাদ হাজীগঞ্জ পৌরসভা’। উপরে স্বাগত ও ধন্যবাদ হাজীগঞ্জ পৌরসভা আর নিচে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কটি যোগাযোগের একটি ব্যস্ততম মাধ্যম। হাজীগঞ্জ পৌরসভার সীমান্তবর্তী এলাকায় এ সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে হাজীগঞ্জ পৌরসভা ও বিভিন্ন হাটবাজারের ময়লা আবর্জনা। এসবের দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন আশপাশের মানুষ। একই সাথে হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কে পথচারী ও হাজার হাজার যাত্রীকে চলাচল করতে হচ্ছে নাক চেপে। মাঝে মাঝে এসব ময়লা আবর্জনায় লাগানো আগুনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এলাকাটি।


শুধুমাত্র এই সড়কটিই নয়, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজীগঞ্জে পৌরসভাধীন মিঠানিয়া ব্রিজ ও আলীগঞ্জ এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের মূখে সড়কের দুই পাশে বাসা বাড়ি ও হাটবাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ময়লার কারণে ভরাট হয়ে গেছে সড়কের পাশে থাকা জলাশয়গুলোও। ক শ্রেণির এই পৌরসভার চতুর্মুখী ময়লা আবর্জনার স্তুপের দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। সড়কের পাশে ময়লায় একাকার হয়ে আছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পৌর বাসিন্দারা।


ময়লা ফেলার জন্য পৌরসভার নিজস্ব নির্দিষ্ট কোনো জায়গা বা ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় যত্রতত্র বাসিন্দাদের ময়লা আবর্জনা ফেলতে হচ্ছে। এর কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে আশপাশের বাসিন্দাদের। হাজীগঞ্জ পৌরসভা সূত্র জানায়, পৌর এলাকা ও বিভিন্ন হাটবাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ টনের মতো বর্জ্য সংগ্রহ করে হাজীগঞ্জ পৌরসভা। আর এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় সেগুলো ফেলা হচ্ছে চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মিঠানিয়া ব্রিজের উত্তরপূর্ব ও পশ্চিম পাশে।


হাজীগঞ্জ পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, পৌরসভা থেকে ময়লা এনে আমাদের এখানে ফেলে এখানকার পরিবেশ দূষিত করে রেখেছে। দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে। এতে পরিবেশ দুষিত হয়ে নানাবিধ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তারা আরো বলেন, পৌরসভা আমাদের কোনো কথাই শুনছে না। তাদের খেয়াল খুশিমতো মহাসড়কের পাশে ও জলাশয়ে আবর্জনা ফেলে। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে মাঝে মধ্যে মনে হয় বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাই। আমাদের বাড়িতে থাকা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা অভিশাপ আমাদের জন্য। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই। স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, পথচারীদের জিম্মি করে রেখেছে। তারা নাক চেপে দুর্গন্ধের মধ্যেই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। দ্রুত সময়ে এই ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।


আরও বলেন, বাসচালক সাগর হোসেন, তিনি জানান, এই এলাকায় এলেই গাড়িতে দুর্গন্ধ ঢুকে যায়। অনেক সময় যাত্রীরা বমি করে ফেলে। আমি নিজেও এখানে এলেই দম নেওয়া বন্ধ রেখে গাড়ি চালাই।


হাজীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) মাহবুবুর রশীদ বলেন, আমাদের কোনো ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হয়নি। এটা নির্মাণের জন্য পৌরসভার মালিকানাধীন জমি প্রয়োজন। আমাদের সেটা নেই। তিনি আরো বলেন, পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এভাবেই সড়কের আশপাশে ও জলাশয়ে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সাবেক পৌর মেয়ররাই এ ব্যবস্থা করে গেছেন। আমাদের বিকল্প কোনো উপায় এখনো তৈরি হয়নি।


হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, শিগগিরই বর্জ্য পরিশোধরেন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিকল্প জায়গার বন্দোবস্ত না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভার ময়লা এসব স্থানেই ফেলতে হচ্ছে। সাময়িক সময়ের জন্য পৌরবাসীকে একটু কষ্ট হলেও সঠিক স্থানে ময়লা ফেলার আহ্বান জানাচ্ছি। 
 

একুশে সংবাদ////র.ন

Link copied!