চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের উপজেলাগুলোর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি—সবখানেই বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে বিপুলসংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশা। এ যানবাহনগুলোর কারণে দিন দিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।
গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কাপাসগোলা এলাকার নবাব হোটেলের পাশে হিজড়া খালের ড্রেনে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় ছয় মাস বয়সী এক শিশুর। শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায় ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর, প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে চামড়া গুদাম এলাকায়। এ মর্মান্তিক ঘটনার পরই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। শুরু হয় নগরজুড়ে রিকশা জব্দের অভিযান।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) চারটি ট্রাফিক জোনের তথ্যমতে, গত ২২ দিনে ব্যাটারিচালিত ২৮৯৬টি রিকশা আটক করে মনসুরাবাদের ডাম্পিং স্টেশনে রাখা হয়েছে। নগরের আনুমানিক ৫০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশার মধ্যে এই সংখ্যাটি অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন ,“মূল সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এসব ব্যাটারিচালিত যান। নগরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান চালানো হচ্ছে, এবং তা অব্যাহত থাকবে।”
ট্রাফিক উত্তর বিভাগের ইন্সপেক্টর কামরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের জোনে এখন পর্যন্ত ৮২৯টি রিকশা জব্দ করে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে।”
নগরবাসীর অভিযোগ, এসব রিকশার অধিকাংশ চালক অল্প বয়সী ও অদক্ষ। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করছে, কেউ হারাচ্ছে প্রাণ। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের পর এই যানবাহনের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়। পুলিশ সিগন্যাল দিলেও চালকেরা তা অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, এমনকি ট্রাফিক সদস্যদের ওপর আঘাত করার অভিযোগও রয়েছে।
নগর পুলিশের পাশাপাশি এবার অভিযানে নামছে জেলা প্রশাসনও। ২১ এপ্রিল থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয় ব্যাটারি রিকশার চার্জিং স্টেশনগুলোয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মালিকদের মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনুল হাসান বলেন,“আমরা কয়েকটি চার্জিং স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছি এবং রিকশাগুলোকে জরিমানা করেছি। ভবিষ্যতে এ অভিযান আরও জোরালো হবে।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এক সমন্বয় সভায় বর্ষাকালে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করেন এবং পুলিশি অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
একুশে সংবাদ//চ.প্র//এ.জে
 
    
 
                        

 
                                         
                                             
                                                        
                             একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
                                             
                                             
                                             
                                            
