গর্ভবতীও নন, সন্তান নেই তারপরও আইন ভঙ্গ করে ইউপি মহিলা সদস্য নিজ নামে মা ও শিশু সহায়তা ভাতার কার্ড করেছেন এবং টাকাও পেয়েছেন। সম্প্রতি এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নে (১,২,৩,নং) সংরক্ষিত ইউপি সদস্য লাকি আক্তার এর বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অবৈধভাবে মা ও শিশু সহায়তা ভাতা বন্ধের দাবিতে সারোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে মা ও শিশু সহায়তা ভাতার জন্য তালিকা চাওয়া হয়। প্রণয়নকৃত তালিকা অনুযায়ী মা ও শিশু সহায়তা ভাতার প্রথম অবস্থায় সাড়ে ৯ হাজার করে টাকা পাবেন প্রসূতিরা। এরই মধ্যে তাঁদের মোবাইলে সে টাকা জমা হয়েছে।
নায়েকপুর ইউনিয়নে ১২৮ জন প্রসূতি মা ও শিশু সহায়তা ভাতার জন্য মনোনীত হন। তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের অনিয়মের মাধ্যমে কার্ড হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কারও সন্তান না থেকেও পেয়েছেন ভাতার কার্ড। অনেকে এলাকায় থাকেন না আবার অনেকের সন্তান লেখাপড়া করছেন স্কুলে। এমন মানুষও মা ও শিশু সহায়তা ভাতার জন্য মনোনীত হন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্যা লাকি আক্তার নিজ নামে মা ও শিশু সহায়তা ভাতার কার্ড করেছেন তিনি নিজে। অথচ লাকি আক্তার গর্ভবতীও নন, নেই কোন শিশু সন্তান। সবচেয়ে যে ছোট সন্তানটি রয়েছে তার বয়সও ১২ বছর। পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
ইউপি সদস্য লাকি আক্তার বলেন, আমার নামে মা ও শিশু সহায়তা ভাতার কার্ড হয়েছে। আমার ৮/৯ বছরের একটি সন্তান আছে। তবুও ভাতার কার্ড পেয়েছি। জানি এটা ঠিক না। অনেকে এভাবে নিয়ে আসছেন। আমিও সে সুযোগ নিয়েছি।
ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাদিস মিয়া বলেন, আমি ইউপি সদস্যদের নিয়ে এটি তৈরি করি। তবে তাঁদের বরাদ্দ পাওয়া তালিকায় মেম্বার লাকির যে নাম ছিল সেটি আমি দেখিনি।
নাম না প্রকাশে একজন সুবিধাভোগী জানান, যাদের সন্তান নেই তাঁদের প্রথমে যে কাজটি করতে হয় সেটি হল, বিভিন্ন ক্লিনিক ও প্যাথলজিতে গিয়ে ভুয়া (গর্ভবতী আছে) একটি সার্টিফিকেট নেওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁদের দিতে হয় ২ হাজার টাকা।
মদন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারমিন শাহজাদি জানান, ইউপি সদস্যের নামে কোন অবস্থাতেই মা ও শিশু সহায়তা ভাতার কার্ড করা যাবে না। যদি এটা কেউ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়া বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এটি সাধারণত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কার্যকর হয়। আর এটি যাচাই বাছাই করার কথা সংশ্লিষ্ট কমিটির। এরপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :