কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে আলোচিত নিজ সন্তানকে নির্যাতনের ঘটনায় বাবা মো. ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায় গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী উপজেলা পাকুন্দিয়ার ফুলদি এলাকা থেকে কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের একটি অভিযানিক টিম তাকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃত ইকবাল পৌর এলাকার শিমুলতলী বাগরাইট মহল্লার নাজিম উদ্দীনের ছেলে।
এ ঘটনায় কটিয়াদী পৌর কাউন্সিলর মো. মাহফুজুর রহমান মিঠু গত মঙ্গলবার রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় শিশু আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আসামি করা হয় স্বর্ণা (৬) নামের নির্যাতিত শিশুটির বাবা মো. ইকবাল হোসেন ও সৎ মা রাবেয়া আক্তার (২৫) কে।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কটিয়াদী পৌর এলাকার বাঘরাইট গ্রামের নির্মমভাবে নির্যাতিত স্বর্ণার মা হালিমা বেগম তার স্বামীর নির্যাতনের কারণে স্বামীকে তালাক দিয়ে সৌদি আরবে চলে যান এবং তিনি বর্তমানে সৌদি আরবে আছেন। তার গর্ভের চারটি সন্তান বাবার কাছেই আছে। মা হালিমাকে ভয় দেখানোর জন্য গত ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইকবাল তার বাড়িতেই স্বর্ণাকে লাঠি দিয়ে বর্বর কায়দায় পেটান ও এক পর্যায়ে গলায় পারা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন।নির্যাতনের চিত্রটি সৎ মা রাবেয়া ভিডিও করেন। পরে ইকবালের শ্যালিকা গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, এদিকে নির্যাতনের ভিডিও সৌদিতে থাকা স্বর্ণার মায়ের কাছে পাঠানো হয়। তিনি সেটি ফেসবুকে পোস্ট করলে রোববার থেকে এই ভিডিওটি ভাইরাল হতে থাকে। জানা যায়, হালিমা সৌদি আরব থেকে সন্তানদের খরচ বাবদ নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাঠাতেন তাদের বাবার কাছে। কিন্তু বাবার চাহিদা ছিল আরও বেশি। হালিমা টাকার পরিমাণ বাড়াতে রাজি নন। সেই কারণেই হালিমাকে ভয় দেখানোর জন্য এই নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয়েছিল।
উক্ত ঘটনায় কটিয়াদীর পৌর কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান (মিঠু) মানবিক কারণে বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করলে নিষ্ঠুর বাবা ইকবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আজ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :