‘শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ-২০২৫ পালন করা হয়েছে।
বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বুধবার (২৮ মে) সকাল ১১টায় ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এতে শিক্ষার্থীরা খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক নানা বার্তা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন এবং বিভিন্ন সচেতনতামূলক স্লোগান দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক আবুল কাশেম তালুকদারসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বাসন্তী হালদার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণের বিকল্প নেই। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের উচিত এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বছরব্যাপী জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া।”
অধ্যাপক আবুল কাশেম তালুকদার বলেন, “শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাইকে খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। শুধু এক-দু’দিন নয়, সারা জীবন পরিমিত ও সুষম খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আমাদের উচিত চিকিৎসার আগেই সুস্থ মানুষকে খাদ্যের মাধ্যমে সুস্থ রাখা এবং অসুস্থদের চিকিৎসার পরিবর্তে খাদ্যের মাধ্যমেই সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা।”
এ সময় অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেন, “জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ সাতদিনব্যাপী পালন করা হয়, কারণ একটি দিনে সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশের অনেক অভিভাবক জানেন না একটি শিশুকে কী খাওয়ানো উচিত এবং কী নয়। এ জন্য আমাদের শিক্ষার্থীরা স্কুলপর্যায়ে গিয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”
দ্বিতীয় পর্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক পুষ্টি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ‘অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন পদ্ধতি’র মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে পুষ্টি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
ক্যাম্পেইনে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে উৎসাহ এবং ফাস্ট ফুড ও আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুষ্টিকর খাবার বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভাগের পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— পুষ্টি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা, সচেতনতামূলক লেখনী, ভিডিও বার্তা ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, পুষ্টি সপ্তাহ একটি বার্ষিক সচেতনতামূলক আয়োজন, যেখানে পুষ্টির গুরুত্ব, সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা, অপুষ্টি প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে দেশব্যাপী নানান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
একুশে সংবাদ /এ.জে