প্রজাপতির রঙে বর্ণিল জাহাঙ্গীরনগর
একুশে সংবাদ : প্রকৃতির রঙ যেন ছড়িয়ে গেছে প্রজাপতির ছোট্ট ডানায়। ক্ষুদ্র রঙিন ডানায় ভর করে তারা উড়ে চলছে ফুল থেকে ফুলে। ছায়া ঘেরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতির বর্ণিল রঙ দেখতে তাইতো এত মানুষের ভিড়।
ছোট্ট মেয়ে জুইফা ইসলাম শ্রেয়া লাল প্রজাপতি সেঁজে বাবার সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রজাপতি মেলা দেখতে ক্যাম্পাসে এসেছে। জালের ভিতর উড়ছে হরেক রকমের প্রজাপতি। এক ফুল থেকে অন্য ফুলে তাদের তিড়িংবিড়িং ওড়াওড়ি দেখে মুগ্ধ মোহাম্মদপুর থেকে মায়ের সঙ্গে প্রজাপতি মেলায় ঘুুরতে আসা ৩য় শ্রেণীর তিন ছাত্রী স্নিগ্ধা, ফারিহা ও রোমানা।
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এ স্লোগানকে ধারণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৮ম প্রজাপতি মেলা-২০১৭। শনিবার বেলা ১১টায় জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রজাপতির সৌন্দর্যের পিছনে দৌঁড়ায়নি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। আমরা জানতাম না আমরা কি কারণে প্রজাপতির পেছনে দৌড়াচ্ছি। প্রজাপতি আমাদের প্রকৃতিতে কি অবদান রাখছে তা আমরা এ প্রজাপতি মেলা থেকে জানতে পারি। তাই এ মেলা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে শনিবার মেলা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে জাল দিয়ে ঘিরে প্রদর্শনী স্টল তৈরি করা হয়। এতে কৃত্রিম উপায়ে প্রজাপতির খাবার (পর্যাপ্ত ফুল, চিনির রস ও ফল) ও অন্যান্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তারপর ছেড়ে দেয়া হয় বিভিন্ন প্রজাতির জীবন্ত প্রজাপতি। সঙ্গে সঙ্গে প্রজাপতিরাও মধুর লোভে ফুলে ফুলে উড়তে শুরু করে। ফুলে ফুলে প্রজাপতির খেলার ছলে মধু আহরণের দৃশ্য দেখে মোহিত হয় আগত দর্শনার্থীরা।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে দিনব্যাপী মেলায় অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল— শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা ও প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী।
এবারের মেলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ের লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থী আফলাতুন কায়সারকে ‘ইয়াং বাটারফ্লাই ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রজাপতির চোখ এবং কালার ভিশনের গবেষণায় সার্বিক অবদানের জন্য জাপানের গ্রাজুয়েট ইউনিভার্সিটি ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের অধ্যাপক কেনটারো আরিকাওয়াকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড-২০১৭’ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এই মেলার আয়োজন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
একুশে সংবাদ // এস.যুন্ত // ০৫.১১.২০১৭
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :