AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মেলায় মানহীন অনুবাদের বই, নেই অনুমতিও


Ekushey Sangbad

০৩:৫২ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
মেলায় মানহীন অনুবাদের বই, নেই অনুমতিও

একুশে সংবাদ : একুশে বইমেলায় প্রতি বছরই অনুবাদ করা বই প্রকাশ হয়। তবে এগুলোর মান নিয়ে সন্তুষ্ট নন পাঠকরা। তারা বলছেন, অনুবাদের বই অনেক আছে। তবে মানসম্মত অনুবাদ নেই বললেই চলে। বেশিরভাগই আক্ষরিক অনুবাদে ভরা এবং সম্পাদনাও করা হয়নি বইগুলোর। এমনকি এসব বই প্রকাশের সময় মূল বইয়ের লেখক- প্রকাশকের অনুমতি নেওয়াও হয় না অনেক সময়। এ বিষয়ে প্রকাশকদের যুক্তি, বিনিয়োগ কম হওয়ায় কপিরাইটের বিষয়ে ভাবার সুযোগ নেই। আর কপিরাইট আইন নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের মতে, বিষয়টি একেবারেই বেআইনি ও অনৈতিক। চাইলেই মূল বইয়ের লেখক-প্রকাশকরা মামলা করতে পারেন। বইমেলা ঘুরে দেখা গেছে, শিশুদের বই বলতে ইংরেজি কার্টুনের বাংলা সংস্করণ। ছোটগল্পেও এর প্রভাব অনেক বেশি। এছাড়া অরুন্ধতী রায়, নোয়াম চমস্কি থেকে শুরু করে বিখ্যাত লেখকদের লেখা দেদারসে অনুবাদ হলেও সম্মতিপত্রের বিষয়ে কোনও আগ্রহ নেই। তবে অনুবাদকরা বলছেন, ‘অনুবাদের সম্মতিপত্রের বিষয়ে তারা আগ্রহ দেখালেও প্রকাশকের দিক থেকে কোনও আগ্রহ থাকে না।’ কপিরাইট অফিসের সাবেক রেজিস্ট্রার ও বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনজুরুর রহমান বলেন, ‘এটা খুব অন্যায়। একজনের সৃষ্টিকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে।’ প্রকাশকরা বলছেন, ‘বাংলায় কি ছাপা হচ্ছে, তা মূল লেখক জানছেন না। ফলে আইনিভাবে তাদের কিছু হবে না। এটি যে নৈতিকতারও প্রশ্ন, সেটা তারা ভাবছেন না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অনুবাদক বলেন, ‘আমি সম্মতিপত্রের জন্য মূল লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা সাফ জানিয়ে দেন, বইটি যে প্রকাশনা সংস্থা ছাপবে তারা যেন মূল প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তারা চুক্তি করেন না। পরে আলাপ করে দেখা যায়, ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ করতে হবে প্রকাশককে। তখন সিদ্ধান্ত হয়, সম্মতিপত্র ছাড়াই ছেপে দেওয়ার।’ তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনজুরুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাজারে এ ধরনের লাখ লাখ বই আছে। কিন্তু মনিটরিং করে বা তাদের সাবধান করে দেওয়ার কোনও প্রবণতা দেখা যায় না। যারা রয়্যালটি পাচ্ছেন তাদের সঙ্গেও সঠিক নিয়মে চুক্তি করা হয় না। বেশিরভাগ অনুবাদক যে সম্মতি নিতে হয়, সেটাই জানেন না। তবে যেসব বই কপিরাইট সময়কাল পার করেছে, সেগুলো অনুবাদের ক্ষেত্রে সম্মতি লাগে না।’ এবারের মেলায় সানজু’র ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ প্রকাশ করেছেন সাবিদিন ইব্রাহিম। অনুবাদের দুরবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফর্মা ও টাকা মেপে অনুবাদ করে বাংলাদেশের বেশিরভাগ অনুবাদক। প্রকাশনী সংস্থাগুলোর ফরমায়েশে বেশিরভাগ কাজ হয়ে থাকে। এজন্য অনুবাদকের মধ্যে অনেকটা দায়সারা ভাব থাকে। দেখা যায় কয়েক মাসের মধ্যেই একটা অনুবাদ যন্ত্রস্থ করা হয়ে যায়। অনুবাদক নিজেও সে বইটি হয়তো আত্মস্থ করার সুযোগ ও সময় পায়নি!’ তার মতে, মানহীন অনুবাদের বই থেকে নিস্তার পেতে হলে প্রথম সারির লেখক-সাহিত্যিকদের শরণাপন্ন হতে হবে। এ প্রসঙ্গে সাবিদিন ইব্রাহিম বলেন, ‘অন্যান্য দেশে সাধারণত তাদের প্রধান লেখক-সাহিত্যিকরা অনুবাদে হাত দেন। কোনও একটি ভাষা বা সাহিত্যের সেরা শিল্পীরা, সেরা পণ্ডিতরা যে অনুবাদ করবেন তার সঙ্গে বাণিজ্যিক বা বাজারি অনুবাদকদের অনুবাদের পার্থক্য থাকবে। এটা কাটিয়ে ওঠার একটা উপায় হচ্ছে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের লেখক ও সাহিত্যিকদের অনুবাদে এগিয়ে আসা। অন্যদিকে প্রকাশনী সংস্থাগুলো এক বছরে সর্বাধিক অনুবাদ বাজারে নিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় না গিয়ে সর্বাধিক মানসম্মত অনুবাদ করার প্রতিযোগিতায় নামতে পারেন।’ অনুবাদের বই সম্পাদনায় সময় না পাওয়া বা সম্পাদনাই না করাকে মানহীনতা জন্য দায়ী করলেন পাণ্ডুলিপি সম্পাদক অতনু তিয়াস। তিনি বলেন, ‘পুরো কাজটির সঙ্গে জড়িতদের পেশাগত দক্ষতার অভাব রয়েছে। অনুবাদের বই সম্পাদনা আরও জরুরি। সেজন্য ইংরেজি জানা বোঝা মানুষের সময় নিয়ে মূল বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে কাজটি করা দরকার। যার কোনওটিই করা হয় না। এছাড়া অনুবাদের বই হলেও পুরো বইয়ের ভাষা এক কিনা, পড়তে একইরকম মনে হয় কিনা সেগুলোও মাথায় রেখে সম্পাদনা করা জরুরি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কেবল বানান দেখার প্রবণতা থাকে।’ অনুবাদের বই প্রকাশের ক্ষেত্রে মূল বইয়ের লেখক-প্রকাশকের অনুমতি না নেওয়া প্রসঙ্গে লেখক ও প্রকাশক মইনুল আহসান সাবের বলেন, ‘এটা অন্যায় ও অনৈতিক। লেখক বা প্রকাশক মামলা করতেই পারেন।’ একুশে সংবাদ // পপি // বাট্র // ১৭-০২-১৭
Link copied!