AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শীত বিদায়ের পদধ্বনি প্রকৃতিতে


Ekushey Sangbad

১১:১১ এএম, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭
শীত বিদায়ের পদধ্বনি প্রকৃতিতে

একুশে সংবাদ : কিছুদিন আগেও গ্রামাঞ্চলে দিনে প্রায়ই সূর্যের দেখা মিলত না। থাকত কনকনে ঠাণ্ডা। হালকা-মাঝারি-তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। কিন্তু শীতের সেই দাপট এখন আর নেই। আবার আগামী বছর শীতের তীব্রতা কেমন থাকবে- এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই জানিয়ে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আগামী বছর শীতের আবহাওয়া এমন না-ও থাকতে পারে। পড়তে পারে তীব্র শীত। গ্রামীণ প্রবাদে আছে, মাঘের শীতে বাঘ পালায়। কিন্তু মাঘ মাস এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু শীত পালাচ্ছে। এটা নিয়ে প্রশ্ন কেবল সাধারণ মানুষের মনে তা নয়, প্রশ্ন রয়েছে আবহাওয়াবিদদের মনেও। উত্তর খুঁজছেন তারাও। কয়েকজন আবহাওয়াবিদ বলেন, সাধারণত ডিসেম্বরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না। কিন্তু এবার হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ই শীতের তীব্রতা না থাকার অন্যতম কারণ। তা ছাড়া আরেকটি কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি। গত বছরের চেয়ে এ বছর তাপমাত্রা বেশি ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবার দেশে শীতের তীব্রতা কমে গেছে। আমাদের দেশের অভ্যন্তরে শিল্পায়ন বেড়ে গেছে। এসব কারণে আবহাওয়ায় অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে।’ শীত কম থাকায় শীতকালীন সবজি চাষেও বিরূপ পড়েছে। মুন্সিগঞ্জের আলু চাষিরা বলছেন, ‘এ বছর শীত নেই। শীত না পড়লে মহাবিপদ। পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে।’ শীত নিয়ে কেবল মুন্সিগঞ্জের চাষিরা নন, যশোরের কৃষকেরাও চিন্তিত। শীতকাল অথচ শীতের তীব্রতা নেই- এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কারণ বললেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ। তিনি বললেন, ‘এ বছর শীতের ব্যাপ্তি ছিল অনেক কম। শীত কম থাকার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। ডিসেম্বরে সাধারণত বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না। কিন্তু এ বছর ২৯ নভেম্বর ভাদ্রা নামের একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। এটা সৃষ্টি হয় আন্দামান সাগরে। পরে এটি চেন্নাই উপকূল অতিক্রম করে এটা আরব সাগরে গিয়ে পড়ে। সেখানে অনেক দিন অবস্থান করে। ওপর থেকে আরব সাগরের (অ্যারাবিয়ান) যে ঠাণ্ডা হাওয়াটা আসে কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওই হাওয়া আসতে বাধাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে এবার শীতের ব্যাপ্তি ছিল খুবই কম।’ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরেকজন আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, চলতি বছরে শীতের ব্যাপ্তিকাল ছিল অনেক কম। আবহাওয়া অফিস সূত্র বলছে, গত বছর (২০১৬) জানুয়ারি মাসে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় দেশজুড়ে। ৫-৬ জানুয়ারি, ১০-১৬ জানুয়ারি এবং ২৩-৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ২০১৫ সালেও তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হয়। এর ব্যাপ্তিকাল ছিল ৬-১৪ জানুয়ারি, ১৮-২৩ জানুয়ারি এবং ২৫-২৭ জানুয়ারি। আর চলতি বছর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় ৭-৯ জানুয়ারি। আবহাওয়া অফিস সূত্র বলছে, বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। ভারত উপমহাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। গত বছর ভারতে স্বাভাবিকের চেয়ে দশমিক .৯১ ভাগ তাপমাত্রা বেশি ছিল; যা ছিল গত শতকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ভারতের মতো আমাদের দেশেও গত বছর স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি ছিল। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলছেন, ২০১৫ সাল ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। ২০১৬ সাল ২০১৫ সালের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে উষ্ণতম বছর হয়েছে।আমরা হিসেব করে দেখেছি, যে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে, আমাদের দেশে গত বছর দশমিক ৯২ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেশি ছিল। অর্থাৎ ভারত ও বাংলাদেশের তাপমাত্রা কাছাকাছি। ভারত উপমহাদেশে দেখা গেছে, গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রায় ১৩ বছরেই তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড পরিমাণ। ২০১৫ সালে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে তাপমাত্রা বেশি ছিল। চলতি বছরকে ব্যতিক্রমী বছর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আবহাওয়াবিদেরা। বজলুর রশিদ বলেন, ‘এ বছর ছিল অন্যান্য বছরের থেকে ব্যতিক্রম। সাধারণ জানুয়ারি আমাদের দেশের সব থেকে শীতলতম মাস। এই সময়ে এক থেকে তিনটা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। এবার মাত্র একটা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। ডিসেম্বর মাসের তাপমাত্রা গতবারের থেকে অনেক বেশি ছিল। সাধারণত আমাদের দেশে নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। কিন্তু ডিসেম্বরে ঘূর্ণিঝড় (সাইক্লোন) সৃষ্টি হয় না। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। সাইক্লোনের কারণে বঙ্গোপসাগরে তাপমাত্রা ছিল উষ্ণ। এ কারণে আরব মহাসাগর থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস বাধা পেয়েছে। ফলে শীতের ব্যাপ্তি কমে গেছে।’ বজলুর রশিদ বললেন, ‘আমরা বলে থাকি জেট উইন। ইউরোপে সূর্য অনেক দূরে থাকে। রাতের তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। এ সময় একধরনের বাতাস আসে, ওই বাতাস কাশ্মীর, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই চ্যানেল দিয়ে শীতের ঠাণ্ডা হাওয়া উত্তরাঞ্চল চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, রংপুর হয়ে ধীরে ধীরে দেশজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ০৫-০২-১৭
Link copied!