AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আগে জানলে পোলাপানকে উচ্চ শিক্ষিত করতাম না


Ekushey Sangbad

১১:২২ এএম, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
আগে জানলে পোলাপানকে উচ্চ শিক্ষিত করতাম না

নিউজ ডেস্ক  :  জনৈকা আফরোজা বেগম সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে এখন প্রায়ই আফসোস করেন, “পরিণতি এমন হবে জানলে পোলাপানকে উচ্চ শিক্ষিত করতাম না।” অথচ তিনি যথেষ্ট পরিশ্রম করে ওদের পড়িয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। ওরা প্রত্যেকেই সফল হয়েছে, কিন্তু ব্যক্তিজীবনে হেরে গেছেন ওদের মা আফরোজা বেগম। ছেলেরা বড় চাকরি করে ইউরোপ, আমেরিকায়। মেয়েরাও জামাইদের সঙ্গে বিদেশে। অতএব বাড়িধারা’র বিশাল বাড়িতে তিনি কেবলই একা। এই বৃদ্ধ বয়সে এভাবে কি থাকা যায় লোকজনহীন এক জনমানব শূন্য বাড়িতে, বাধ্য হয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন ওল্ডহোমে। নিজেকে তাই মাঝে-মধ্যে প্রশ্ন করেন, কি লাভ হলো ছেলেমেয়েদের মানুষ করে। বাংলাদেশের সমাজে সেলিনা মজুমদারদের মতো প্রবীণ নারীদের সংখ্যা অনেক। পার্থক্য কেবল এখানে থাকতে পারে যে, কারও-কারও সন্তানরা দেশেই আছে কিন্তু খোঁজ রাখছে না মায়ের। ফলে প্রবীণ নারীকে কষ্টকর এক জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে । নারী হিসেবে এটা অবশ্যই বেদনাদায়ক। বিশ্বব্যাপী বার্ধক্য বা প্রবীণ অবস্থা একটি সামাজিক সমস্যা হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৯৯ সালকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক প্রবীণ বর্ষ ঘোষণা করে এবং ২০০১ সালের মধ্যে বিশ্বময় সব বয়সীর উপযোগী সমাজ পুনর্গঠন এবং জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রবীণদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ উদ্যোগ সত্ত্বেও আমাদের দেশে প্রবীণদের স্বার্থে সরকারি পর্যায়ে এখনও তেমন কোন ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। তবে স্বেচ্ছাসেবী পর্যায়ে বেশ কয়েকটি সংগঠন কাজ করছে ।বাংলাদেশের প্রচন্ড দারিদ্র্য ও সামাজিক অনগ্রসরতার বহুমাত্রিক ভিড়ে চাপা পড়ে গেছে বার্ধক্যজনিত সঙ্কটে পীড়িত মানুষের করুণ আর্তি। কালের বিবর্তনে পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রবল ঝঞ্ঝায় আমাদের দেশেও পারিবারিক ভাঙন, অভাব, নগরায়ণ, শিল্পায়নসহ বহুবিধ কারণে আমাদের ঐতিহ্যবাহী যৌথ পরিবার ব্যবস্থায় চিড় ধরেছে। এটি পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই বিষফল। আগেকার সমাজ ব্যবস্থায় একান্নভুক্ত পরিবারে প্রবীণদের অবস্থান ছিল সকলের ঊর্ধ্বে-অত্যন্ত সম্মানজনক। কিন্তু কালের বিবর্তনে আমাদের নৈতিক-মানবিক মূল্যবোধে ব্যাপক ধস নামায় আজ সমাজে বয়স্করা অনেকাংশেই পরিতাজ্য হয়ে পড়েছে। যে অভিজ্ঞ প্রবীণরা এক সময়ে এই সমাজ নির্মাণে ছিলেন দক্ষ কারিগড় তাদেরকেই আজ বোঝা হিসেবে অবহেলার শিকারে পরিণত হতে হচ্ছে। এদেশের মহিলাদের গড় আয়ুু ৫৭.৬ বছর। প্রবীণ বলতে ৫০-এর বেশি বয়সকে ধরা হয়। বিডিএইচএস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে মোট মহিলার ১০.৫% পঞ্চাশোর্ধ। আর জাতিসংঘ বার্ধক্য বা প্রবীণ হিসেবে ৬০ বছর বয়সকে চিহ্নিত করেছে। সে হিসেবে দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬. ১% জনগোষ্ঠী প্রবীণ। আগামী ২০ বছর পর এই পরিমাণ বেড়ে ১০. ১% দাঁড়াবে। জীবনসায়াহ্নে এসে মহিলারা মেনোপজের যে জটিল পর্যায়ে উপনীত হয় তাকে প্রান্তিক জীবনের একটি স্পর্শকাতর সন্ধিক্ষণ বলা যায়। বাংলাদেশি মহিলাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই মনোপজ আসে ৪৫-৫০ বছর বয়সের মধ্যে। এ সময়ে তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের মনো-দৈহিক পরিবর্তন ও জটিল উপসর্গ দেখা দেয়। জীবনচক্রের এই অন্তিমলগ্নে এসে প্রবীণ নারীদের স্বাস্থ্যসেবা বলতে গেলে চরমভাবে অবহেলিত ও উপেক্ষিত হয়ে পড়ে। প্রচলিত সমাজে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে নারী হয় অপুষ্টির শিকার। উপরন্তু বাল্যবিয়ে, ঘন-ঘন সন্তান প্রসব, স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার প্রভৃতি কারণে নারী থাকে দুর্বল, তাই তার বার্ধক্যও আসে দ্রুত। এসব মনো-দৈহিক জটিলতার কারণে অনেক প্রবীণ নারীর মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এছাড়া একাকীত্ব, সুষ্ঠু বিনোদনের অভাব তার জীবনকে করে তোলে দুর্বিষহ। এক তথ্য সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতি হাজার পুরুষের মধ্যে ১. ৩৮ জন এবং প্রতি হাজার নারীর মধ্যে ১৭ জন মানসিক রোগে আক্রান্ত। সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রবীণ নারীরা বহুবিধ সমস্যার মধ্যদিয়ে দিন যাপন করছেন। তারা আমাদেরই মা-আমাদেরই নিকট আত্মীয়। এটা মনে রেখে তাদের কল্যাণে এগিয়ে আসা প্রত্যেকের কর্তব্য।     একুশে সংবাদ.কম //এম আরিফ//১১-১২-২০১৫
Link copied!