AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নড়াইল থেকে হারিয়ে গেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী চির পরিচিত বাবুই পাখির বাসা


Ekushey Sangbad

১২:৪৫ পিএম, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
নড়াইল থেকে হারিয়ে গেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী চির পরিচিত বাবুই পাখির বাসা

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় : ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে...।’ রজনীকান্ত সেনের এ কবিতার লাইনটির মতো এখন আর বাবুই পাখি তার কুঁড়েঘরটি নিয়ে গর্ব করতে পারে না। বিস্তারিত উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে আগ্রাসী যান্ত্রিকতা তার শিল্প অহঙ্কার তছনছ করে দিয়েছে। তাকেও চড়াইয়ের মতো আবদ্ধ করেছে অট্টালিকার পরে। তাই হয়তো এখন আর গ্রামের মেঠোপথের ধারে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছটির সামনে তার সুরেলা কণ্ঠের কিচিরমিচির ডাক শোনা যায় না। দেখা মেলে না শৈল্পিক বাসায় সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রণয়ের দৃশ্যও। প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের আগ্রাসী কার্যকলাপের বিরূপ প্রভাবেই ওরা হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে দেশের কয়েকটি জায়গায় এখনো হঠাৎ করেই চোখে পড়ে বাবুই পাখির বাসা। নড়াইল শহরের অদূরে বাসগ্রাম বাজার মূল সড়কের পাশের একটি তালগাছে এদের কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন বাসা রয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি শেষে গতকাল দুপুরে উজ্জ্বলতায় রাঙা প্রকৃতির মতো এরাও মেতে ওঠে প্রাণোচ্ছল উচ্ছ্বাসে। বৃষ্টির বন্দিত্ব ঘুচিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত মনে তারাও পাখা মেলে নীল দিগন্তে। সাধারণত নলখাগড়া ও হোগলা পাতা দিয়ে বাবুই পাখি তার বাসা বুনে থাকে। তবে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতাও ব্যবহার করে বাবুই। উঁচু তালগাছে তৈরি চমৎকার বাসাটি যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও টিকে থাকে তাদের বাসা। বাবুই পাখি সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করতে ডোবা, নালা, পুকুরের জলে স্নান করে, এরপর উঁচু তালগাছ, নারিকেল বা সুপারি গাছে বাসা তৈরির কাজ শুরু করে। বাসা তৈরির অর্ধেক কাজ হলে কাক্সিক্ষত স্ত্রী বাবুইকে ডেকে এনে বাসা দেখায়। তার পছন্দ হলে গড়ে সম্পর্ক। স্ত্রী বাবুইর বাসা পছন্দের পর পুরুষ বাবুই মহাআনন্দে বিরামহীনভাবে বাকি কাজ শেষ করে মাত্র চারদিনে। স্ত্রী বাবুই ডিম দিলেই পুরুষ বাবুই আরেক সঙ্গী খুঁজতে বের হয়। তারপর আবার বাসা বানানো, আবার ডিম দেয়া, আবার সঙ্গী খোঁজা। এভাবে এক মৌসুমে পুরুষ বাবুই সর্বোচ্চ ছয়টি বাসা তৈরি করে। তবে এতে স্ত্রী বাবুইর কোনো আপত্তি নেই। স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। আর তিন সপ্তাহ পর বাবুই বাচ্চা ছেড়ে উড়ে যায়। বাবুই পাখি একধারে শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি। বাবুই মানুষের মানবিক ও সৌন্দর্যবোধকে জাগ্রত করার পাশাপাশি দেয় স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা। কথিত আছে, রাতে জোনাকি পোকা ধরে এনে সে তার বাসায় রাখে। বাবুই পাখি সাধারণত বিভিন্ন ফসলের বীজ, ধান, বিভিন্ন প্রজাতির পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু ও রেণু প্রভৃতি খেয়ে জীবনধারণ করে। বাবুই পাখি দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। এরা সাধারণত তিন প্রজাতির। দেশি বাবুই ((Ploceus philippinus), দাগি বাবুই (Ploceus manyar) এবং বাংলা বাবুই (Ploceus bengalensis) ।   একুশে সংবাদ ডটকম/এসএস/১৮.১০.২০১৫
Link copied!