মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা কোনোভাবেই থামানাো যাচ্ছে না। মাটি কাটা বন্ধে অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করেও কোনো সুফল পাচ্ছেনা উপজেলা প্রশাসন। এব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনায় তৎপর রয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক শ্রেণির মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের ফুসলিয়ে নামমাত্র মূল্যে কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এসব কৃষি জমি থেকে উর্বর মাটি কাটার ফলে ফসল উৎপাদন কমে যাবে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের, গোলগাঁও, খিলগাঁও, লাহারপুর, সিক্কা, কালাপুর ইউনিয়নের, লামুয়া, দক্ষীণ কালাপুর, শ্রীঙ্গল সদর ইউনিয়নের, পশ্চিম লালবাগ, পশ্চিম ভাড়াউড়া, রুপসপুর চিড়িয়াখানা রোড), ইসলামাবাদ, উত্তর উত্তরসুর এসব এলাকায় সকাল থেকে রাত পযন্ত মাটির বহনকারী ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করছে।
প্রতিদিন ১০-১২টি ট্রাক্টর দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় গ্রামের রাস্তা ধূলাতে সয়লাব হয়ে পড়ছে। মাটি কেটে নেওয়ার কারণে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ধূলা-বালির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। এদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। অবৈধ এসব যানবাহনের উৎপাতে অতিষ্ঠ স্কুলগামী কমলমতি শিশু-কিশোরসহ সকল পথচারিরা। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়াতে স্থানীয়রা এদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন, সারাদিন মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচলের কারণে জমিতে স্তুপাকারে পড়েছে ধুলা। ধান গাছের চারা নষ্ট হচ্ছে। এভাবে মাটি কাটার ফলে জমির উর্বরা শক্তিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির মাটি কেটে নেওয়ায় কয়েকটি জমি নিচু হয়ে গেছে। এতে জমিতে দেওয়া সেচের পানি থাকছে না, ওই সব নিচু জমিতে গিয়ে জমা হচ্ছে। এতে অন্য কৃষকরাও বাধ্য হয়ে তাদের জমির মাটি বিক্রি করছেন।
ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী কাজ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং থাকবে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্ধীপ তালুকদার।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অনেক অভিযান পরিচালনা করেছি, অর্থদন্ড দিয়েছি এবং গাড়িও আটক করেছি। এরকম অভিযান অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগির আমরা আবারও এবিষয়ে অভিযান পরিচালনা করবো।
একুশে সংবাদ/এ.ম.প্র/জাহাঙ্গীর