AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিস্ফোরণের দায় নেবে কে?


Ekushey Sangbad
বশির হোসেন খান
০৯:৪৭ পিএম, ৮ মার্চ, ২০২৩
বিস্ফোরণের দায় নেবে কে?

#নিহত ২০, দগ্ধ ১১, আহত ১০০

#সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। কেই শঙ্কামুক্ত নয়।

 

  • সেফটিক ট্যাংক কিংবা গ্যাস লিকেজ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে 
    -খন্দকার গোলাম ফারুক, পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর
     
  • মৃত্যুর দায় রাজউকের ওপর একটু তো যাবেই এটা স্বাভাবিক
    -হামিদুল ইসলাম, পরিচালক (জোন-৫), রাজউক 
     
  • আমরা পরীক্ষা করছি। গ্যাস জাতীয় কিছু থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে
    -লে. ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক (অপারেশন), ফায়ার সার্ভিস
     
  • গ্যাস লিকেজ থেকে জমতে জমতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হয়
    -এ কে এম শাকিল নেওয়াজ, অগ্নি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ
     
  • গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটেনি 
    - প্রকৌ. মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ, এমডি,  তিতাস

 

ঢাকার সাইন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা বাণিজ্যিক ভবনে ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি অক্সিজেন কারখানায় বড় বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শরীরে পোড়া ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন হাজারো মানুষ। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর গুলিস্তানের কাছে সিদ্দিকবাজারের নর্থ-সাউথ রোডে ১৮০/১ হোল্ডিংয়ের সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এখন প্রশ্ন- এ ধরণের দুর্ঘটনার দায় কার?

গুলিস্তানের ভবন বিস্ফোরনে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার

এই তিন ঘটনার বাইরেও বিগত কয়েক বছরে বড় ধরণের বিস্ফোরণের খবর গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। তবে সবকটি বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে ‍‍`জমে থাকা গ্যাসের‍‍` বিষয়টিকে দায়ী করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তে কর্তৃপক্ষের অবহেলা প্রকাশ্যে এলেও তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। বেশিরভাগ সময় দায় চাপিয়ে দেয়া হয় ভবন মালিকের উপর।

 

ফায়ার সার্ভিসের দাবি, জনগণের অসচেতনতার কারণেই বার বার এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার আগে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকটির দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। যে কটির তদন্ত প্রতিবেদন সামনে এসেছে সেখানে বিস্ফোরণের পেছনে মূলত দায়ী করা হয়েছে ভবন বা প্রতিষ্ঠানের মালিককে।

স্বজন হারানো এক নারীর আর্তনাদ।

মঙ্গলবারের ঘটনায় ২০ জন নিহত হলেন, দগ্ধ হলেন ১১ জন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা ও গুরুতর আহতসহ মোট চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক মানুষ। ঘটনার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণে মুহূর্তে কেঁপে ওঠে গুলিস্থান এলাকার মূল সড়ক ও তার আশপাশ। রাস্তায় বৃষ্টির মতো পড়তে থাকে কাঁচের টুকরো। পরে দেখা যায়, ভবনের নিচতলা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। বিধস্ত হয়েছে দুটি ভবন। ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘণ্টাখানেক পর মৃত্যু খবর আসতে থাকে।

 

এভাবে গ্যাস থেকে একের পর এক আগুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব ঘটনায় মারা যাচ্ছেন অনেকে। এর দায় কার? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে এর দায়ভার নিতে চায় না কেউই। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের দায় এড়ানোর চেষ্টার মধ্যেই একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক বহুতল ভবন। সিদ্দিকবাজারের নর্থ-সাউথ রোডে ১৮০/১ নম্বর ভবনটি ৪৫ বছর আগের। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জোড়াতালি দিয়ে চলছিল ভবনের কার্যক্রম।

প্রথম দিনের উদ্ধার কর্যক্রমের সময়

বিস্ফোরণের পর দেখা গেছে ইট ছিলো খুবই নিম্নমানের। দুই সুতা রডের উপরে দাড়িয়ে আছে ভবনটি। অগ্নিকান্ড কিংবা বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও অধিকাংশ রিপোর্ট আলোর মুখ দেখছে না। কিছু কিছু সুপারিশ পেশ করলেও তার আলোকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে খুবই কম। গুলিস্থানের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকেও কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ সকল কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখবে, নাকি চাপা পড়ে যাবে? এমনই প্রশ্ন স্থানীয়দের।

 

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিস্ফোরক পরিদফতর যা বলছে:

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সিদ্দিকবাজারে সাততলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় সেখানে সেফটিক ট্যাংক কিংবা গ্যাস লিকেজ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সেসব বিষয় তদন্ত করছেন।  এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ঢাকা শহরের সুয়ারেজ ও গ্যাস লাইন এবং অনেক পুরাতন বিল্ডিং রয়েছে; এগুলোর কী অবস্থা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। পুলিশের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ জানানো হবে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

 

তিনি আরও বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দ্রুত একটি ওয়ার্কশপ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তারা স্যুয়ারেজ লাইন কিংবা গ্যাসের লাইন কোথায় বিপজ্জনক অবস্থায় আছে সেসব স্থান পরিদর্শন করবে। যাতে করে এ ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সিদ্দিক বাজারে অবস্থিত দুটি ভবনে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি  বলেন, আমরা পরীক্ষা করছি। গ্যাস জাতীয় কিছু থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে। এতে ভবন দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ভবনের সব পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

বিস্ফোরক পরিদফতরের যুগ্ম সচিব প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মোহা: নায়েব আলী বলেন, এখন পর্যন্ত কীভাবে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা জানা সম্ভব হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে আসল কারণ জানা যাবে।  আমাদের দুজন সদস্য কাজ করছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বলা যাবে।

 

বিস্ফোরক পরিদফতরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, ঘটনা পরিদর্শনে এসে ভবনেই ঢুকতে পারি নাই। তাই তদন্ত কাজ শেষ হওয়ার আগে বলা সম্ভব নয়। 

 

সরাসরি গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের বিষয়টি নাকচ করে দিলেন তিতাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌ. মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্। তিনি বলেন, তিতাসের গ্যাস সংযোগ ও  সব রাইজার ঠিক আছে। কেনো বিস্ফোরক ঘটনা ঘটলো তা আমি জানি না। আমি তো বিশেষজ্ঞ নই। তাই কিভাবে বলবো কেনো এই বিস্ফোরণ। 


র‌্যাবের ডিজপোজাল ইউনিট মনে করছে এটা গ্যাস সংক্রান্ত ঘটনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হুট করে দায় চাপিয়ে দিলে হবে না। পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে বলুক।  

 

র‌্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান মেজর মশিউর রহমান বলেছেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ভবনের বিস্ফোরণ বেজমেন্ট থেকে হয়েছে। এটা স্বাভাবিক কোনো বিস্ফোরণ নয়। গ্যাস জমে কিংবা অন্য কোনোভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে।

ছেলে হারানো এক বাবার কান্না

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘ভবনে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ২০ জন হয়েছে। আর আহত ২০০ জনের বেশি হবে। মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে সিদ্দিক বাজারে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণটি খুব ভয়াবহ বিস্ফোরণ। আমরা আহতদের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’ ইতোমধ্যে ১০ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে পারবো কেন এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র না নিয়ে কিংবা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে কেউ যেন এ ধরণের ভবন নির্মাণ না করেন। সবকিছু মেনে ভবন নির্মাণ করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কমে যেত।


বিস্ফোরণের ঘটনাগুলোর অগ্রগতি কী?

রবিবার সকালে ঢাকার সাইন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণ অন্তত তিন জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।

পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারি দল ভবনটি পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, ওই ভবনে কোন না কোনভাবে জমে থাকা গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। এই গ্যাস পয়ঃনিস্কাশন লাইন থেকে লিক হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের হয়নি। সাইন্সল্যাবের এই ঘটনা ২০২১ সালের ২৭শে জুন মগবাজারে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেখানেও তিন তলা ভবনের নীচতলায় জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ওই ঘটনায় ভবনের নীচতলায় কোনও গ্যাস সংযোগ পাওয়া যায়নি, গ্যাস সিলিন্ডারও অক্ষত ছিল। সেসময় বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, তারা সেখানে মিথেন গ্যাসের গন্ধ পেয়েছেন যা পয়ঃনিষ্কাশন লাইন থেকে লিক হতে পারে। এছাড়া ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

 

তদন্ত সংস্থা সিআইডি বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটন করে জানায় মসজিদের ভেতরে গ্যাস ও বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ ছিল। গ্যাস লাইনের লিকেজ দিয়ে বের হয়ে আসা গ্যাসের ওপর বিদ্যুতের স্পার্ক পড়তেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এদিকে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ও সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।


অগ্নি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক কর্মকর্তা এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, সাধারণত কোন আবদ্ধ জায়গায় যদি গ্যাসের মাত্রা ৫% থেকে ১৭% হয় তাহলে কোনোভাবে আগুনের স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শ পেলেই বিস্ফোরণ ঘটে। এই আগুন দেশলাইট, জ্বলন্ত সিগারেট, লাইন ফ্যানের সুইচের সামান্য স্পার্ক থেকেও হতে পারে।

পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণে ১৮ জন নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয় । 

তিনি আরো বলেন, সাধারণত গ্যাসলাইনগুলো লিক করলে মাটির বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে সেই গ্যাস পানি বা পয়নিষ্কাশন লাইনে মিশে যেতে পারে। সেই পাইপ বেয়ে গ্যাস উঠে যায় বহুতল ভবনে। সেখানে যদি পরিবেশ আবদ্ধ থাকে, তাহলে গ্যাস জমতে জমতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হয়।

 

এর কারণ হিসেবে অগ্নি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এ কে এম শাকিল নেওয়াজ আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট এই সংস্থাগুলোকে তদন্ত কমিটিতে রাখার কারণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

 

তিনি বলেন, এখানে যাদের গাফেলতি থাকতে পারে তারাই যদি কমিটিতে থাকেন তাহলে সেখানে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যায় না। ক্ষেত্রে অগ্নি নিরাপত্তা, রসায়ন, বিস্ফোরক, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দুর্ঘটনা সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, মনিটরিংয়ের জায়গায় বড় ঘাটতি রয়েছে। আবার এতো সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবও রয়েছে। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি থাকলে দায়িত্বে অবহেলার জায়গাগুলো আর থাকবে না।

 

যতো দোষ:

প্রতিটি বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রতিবারই একটি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রিপোর্ট দেয়ার জন্য কমিটিগুলোকে সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় তদন্ত প্রতিবেদন আসতেই লম্বা সময় পেরিয়ে যায়। আবার প্রতিবেদনে তদন্তের ফলাফল সামনে এলেও দুর্ঘটনার সকল দায় শেষ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি, ভবন মালিক, কারাখানা মালিক বা মসজিদ কর্তৃপক্ষের ওপরেই চাপানো হয়।

 

"মানুষ ভীষণ অসচেতন, তারা ব্যস্ততার অযুহাত দিয়ে গ্যাসের লিকেজ ঠিক করে না, মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বদলাতে চায় না। বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখে না। এভাবে আমরা ঝুঁকি তৈরি করছি। কিন্তু এতো ঘটনার পরও কারও টনক নড়ে না।" এমনটাই জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অপারেশন্স বিভাগের পরিচালক তাজুল ইসলাম চৌধুরী।


বিস্ফোরণ ও অগ্নি দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন ভবন পরিদর্শনে তিনি জানতে পেরেছেন, ফায়ার সার্ভিস বা সিটি করপোরেশন থেকে অগ্নি নিরাপত্তা মেনে যে নকশা পাস করা হয়, ভবনটি সেই মোতাবেক বানানো হয়নি। অন্তত ৭০ ভাগ ভবনে তিনি এই ব্যত্যয় হতে দেখেছেন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া বা কাউকে নিয়ম মানতে চাপ দেয়ার কোন এখতিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নেই বলে তিনি জানান।

 

এ ব্যাপারে রাজউকের পরিচালক(জোন-৫) হামিদুল ইসলাম বলেন, সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে মৃত্যুর দায় রাজউকের ওপর পড়ে। মগবাজার বিস্ফোরণ, সায়েন্সল্যাব এবং সব শেষ সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান রাজউকের দায় রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হামিদুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুর দায় রাজউকের ওপর একটু তো যাবেই এটা স্বাভাবিক।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!