AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

তিস্তার বুকে সেচনির্ভর চাষাবাদ


Ekushey Sangbad
মোঃ জামাল বাদশা, লালমনিরহাট
০৯:৩৪ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
তিস্তার বুকে সেচনির্ভর চাষাবাদ

তিন মাস আগেও তিস্তার বুকে পানি থ থ করলেও এখন পানিশুন্য হয়ে পড়েছে প্রমত্তা এই নদী। তাই তিস্তার বুকে বালু চরে ডিজেল চালিত পানির পাম্প (শ্যালো) বসিয়ে সেচের পানি সংগ্রহ করে চাষাবাদ করছেন চরা অঞ্চলের চাষীরা।

 

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা ধুধু বালু চরে আলু, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, পেয়াজ, মরিচসজ বিভিন্ন শাক-সবজি উৎপন্ন করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন কৃষকরা। আর নদীর বুকের কৃষকের এই সেচ নির্ভর চাষাবাদে উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ।

 

লালমনিরহাট কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫ উপজেলায় জেগে ওঠা জমির পরিমান ১০ হাজার ২০০ হেক্টর। এ বছর চাষাবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। তবে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গিয়েছে ভিন্ন চিত্র। জেগে ওঠা চরের বৃহৎ অংশই চাষাবাদের বাহিরে রয়েছে এখনো। আর চাষাবাদ কৃত জমিতেও নদীতে পানি সংকট থাকায় কৃষকরা শ্যালো ইঞ্জিন ব্যবহার করে সেচ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

 

বালুময় জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবারো শুকিয়ে যাওয়ায় খরচ মিটিয়ে লাভবান হওয়া নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা। নদীটি প্রায় পানিশূন্য থাকায় কৃষকরা আক্ষেপ করে জানিয়েছেন, যদি নদীতে পানি থাকত তাহলে সোনালী ফসল ফলাতে তাদের কোন বেগ পেতে হত না। পানি না থাকায় তাদের এখন মরণদশা। ডিজেল কিনে ফসল ফলাতে তাদের খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ।

 

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা এলাকার চর কৃষক মেহের আলী আলী (৬০) বলেন, তিস্তা সড়ক সেতুর পাশে তিস্তা নদীর বুকে ধুধূ বালুচরে তিনি আলু ও মরিচ চাষ করেছেন। আলু ও মরিচ খেতের পানির দরকার হওয়ায় তিনি নদীর বুকে শ্যালো মেশিন বসিয়েছেন। কয়েকজন কৃষক মিলে আমরা একটি শ্যালো মেশিন থেকে সেচের পানি সংগ্রহ করে ধুধু বালু চরে চাষাবাদ করছি। একই চরের কৃষক শফিক উদ্দিন (৫৫) এ বছর প্রায় ৮ বিঘা বালুচরে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন জানিয়ে বলেন, তিস্তা নদীতে তেমন পানি প্রবাহ নেই তাই তাদেরকে শ্যালো মেশিন বসিয়ে সেচের পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ‘তিস্তার বুকে মাত্র ৩৩-৩৫ ফিট পাইপ বসালে তারা পানি পাচ্ছেন।

 

কালীগঞ্জ উপজেলার চর ভোটমারী এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন (৫৫) জানান, আলু ও মিষ্টি কুমড়া চাষে প্রচুর পরিমানে সেচের পানি প্রয়োজন। চারদিক ধুধু বালুচর ও পানিশুন্য হয়ে পড়েছে তিস্তা। অনেকটা দুরে একটি চ্যানেলে তিস্তার পানির কিছুটা প্রবাহ থাকলেও সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করা তাদের জন্য কষ্টকর।ফলে ‘ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনই সেচে কাজের ভরসা।ফলে ফসল উৎপাদনে খরচ তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম (৬০) জানান‘গেল ১০-১২ বছর থেকে আমরা চরের কৃষকরা এভাবেই পানি সরবরাহ করে বালুচরে চাষাবাদ করছি।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর লালমনিরহাটের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, জেলায় তিস্তা ও ধরলা নদীর বিশাল চরাঞ্চলে প্রায় ২০ হাজার কৃষক বালুচরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। আলু, ভুট্টা ও মিষ্টি কুমড়া উৎপন্ন করে চরের কৃষকরা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন। ‘তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ থাকলে তারা সেখান থেকে সেচের পানি সরবরাহ করে ফসল উৎপাদনে খরচ কমাতে পারতেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে চর কৃষকদের বালুচরে নানা ফসল উৎপাদনে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, উজান থেকে পানি না আসায় তিস্তায় পানি প্রবাহ অনেক কমেছে। বন্ধ রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেট। তাই তিস্তা ব্যারেজের ভাটিতে পানি প্রবাহ আরো কম। বিশাল পরিমানে পলি জমে তিস্তার বুক ভরাট হয়ে মূল-ভূখন্ডের সমান হয়ে গেছে তাই বর্ষাকালে অল্প পানিতে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ‘তিস্তায় যেটুকু পানি প্রবাহ আছে সেটিও ৫-৬টি চ্যানেলে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। তিস্তা নদী খনন করে একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে রুপান্তর করতে পারলে তিস্তায় পানি প্রবাহ সচল থাকবে। এতে লাভবান হবেন চরের কৃষকরা আর রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক পরিবেশও।

 

একুশে সংবাদ.কম/জা.ব.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!