আল্লাহ তাআলা ধৈয্যশীল ও সৎকর্মশীল বান্দাকে ভালোবাসেন। কোরআনুল কারিমের পৃথক দুটি আয়াতে তিনি তা ঘোষণা করেন। ধৈর্যধারণ করা অনেক বড় নেক কাজ। চাইলেই কেউ সবর করতে পারেন না। আবার সৎ কাজ করাও ব্যক্তির জন্য অনেক কষ্টকর। যারা ধৈর্যধারণ করবে এবং সৎকাজ করবে মহান আল্লাহ তাদের ভালোবাসবেন। বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনার মাঝে মহান আল্লাহ এ ঘোষণা দেন এভাবে-
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ نَّبِیٍّ قٰتَلَ ۙ مَعَهٗ رِبِّیُّوۡنَ کَثِیۡرٌ ۚ فَمَا وَهَنُوۡا لِمَاۤ اَصَابَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ مَا ضَعُفُوۡا وَ مَا اسۡتَکَانُوۡا ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الصّٰبِرِیۡنَ
‘আর কত নবি ছিল, যার সঙ্গে থেকে অনেক আল্লাহওয়ালা লড়াই করেছে। তবে আল্লাহর পথে তাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তার জন্য তারা হতোদ্যম হয়নি। আর তারা দুর্বল হয়নি এবং তারা নত হয়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৬)
وَ مَا کَانَ قَوۡلَهُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡا رَبَّنَا اغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ اِسۡرَافَنَا فِیۡۤ اَمۡرِنَا وَ ثَبِّتۡ اَقۡدَامَنَا وَ انۡصُرۡنَا عَلَی الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ
‘আর তাদের কথা শুধু এই ছিল যে, তারা বলল, ‘হে আমাদের রব, আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে আমাদের সীমালঙঘন ক্ষমা করুন এবং অবিচল রাখুন আমাদের পাসমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)
فَاٰتٰىهُمُ اللّٰهُ ثَوَابَ الدُّنۡیَا وَ حُسۡنَ ثَوَابِ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
‘এরপর আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব পুরস্কার (বিজয়) এবং পরকালের উত্তম পুরস্কার (বেহেশ্ত) দান করলেন। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৮)
আয়াতের সার-সংক্ষেপ
অনেক নবি ছিলেন, যাদের অনুবতী হয়ে অনেক আল্লাহভক্ত (কাফিরদের বিরুদ্ধে) লড়েছিলেন। তাঁরা আল্লাহর পথে সংঘটিত বিপদাপদের কারণে সাহস হারাননি। তারা দেহ ও মনের দিক দিয়ে দুর্বল হননি এবং তারা শত্রুর সামনে নত হননি; আল্লাহ তাআলা এমন দৃঢ়চেতা ধৈর্যশীল লোকদের ভালোবাসেন।
তাদের মুখ থেকে এ কথা ছাড়া কিছুই বের হয়নি যে, তারা আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের অপরাধ ও আমাদের কর্মের বাড়াবাড়ি ক্ষমা করো। আর কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় কর। আর কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের জয়ী কর।
এ দৃঢ়তা ও দোয়ার বরকতে এরপর আল্লাহ তাআলা তাদের দুনিয়ার পুরস্কার বিজয় ও সাফল্য দান করলেন এবং পরকালের উত্তম প্রতিদান (সন্তুষ্টি ও জান্নাত) দিলেন। আল্লাহ তাআলা এমন সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।
উল্লেখিত তিন আয়াতে আগের নবিদের সঙ্গে জিহাদে অংশগ্রহণকারী আল্লাহওয়ালাদের দৃঢ়তা, বিপদাপদে অস্থির ও দুর্বল না হওয়ার কথা বর্ণনা করার পর তাদের একটি বিরাট গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা এ অপূর্ব আত্মত্যাগের মধ্যেও আল্লাহর দরবারে কয়েকটি দোয়া করতেন-
১. আমাদের বিগত অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন।
২. বর্তমান জিহাদ কালে আমরা যে ত্রুটি করেছি, তা ক্ষমা করুন।
৩. আমাদের দৃঢ়তা বহাল রাখুন।
৪. শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ী করুন। এসব দোয়ায় মুসলমানদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনুল কারিমের আয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের প্রকৃত ধৈর্যধারণ ও সৎকর্মশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
একুশে সংবাদ/জ.গ/এস.আই
আপনার মতামত লিখুন :