AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আমিরাতে অগ্নিকাণ্ডে ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
১১:৫৮ এএম, ৩১ মে, ২০২৩
আমিরাতে অগ্নিকাণ্ডে ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে একটি আসবাবপত্র কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। 

 

মঙ্গলবার (৩০ মে) স্থানীয় সময় ভোর ৫টার দিকে আবুধাবির শারজাহ শহরে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

 

মৃত তিন প্রবাসীর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নে। তারা হলেন সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের মতইন গ্রামের মো. রাসেল (২৬), পলতি তারাবাড়িয়া গ্রামের তারেক হোসেন ওরফে বাদল (৪২) ও মো. ইউসুফ (৪৫)।

 

সরেজমিনে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় হয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা। গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একই গ্রামের তিন ব্যক্তির অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না গ্রামবাসী।


নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম বলেন, দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রাসেল ছিল দ্বিতীয়। ঢাকার একটি ব্যাগ কারখানায় চাকরি করে সংসার চালাতো সে। দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। দেড় বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান থাকলেও সেও শারীরিকভাবে অসুস্থ। জীবিকার তাগিদে ও পরিবারের খরচ চালাতে প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা দারদেনা করে ২০২২ সালে আবুধাবিতে যায় রাসেল। একই এলাকার আরও কয়েকজন থাকায় একটি সোফা কারখানায় চাকির করতো রাসেল।


রাসেলের মা আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাত ১টার দিকে তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে সে। পরদিন রাতে ডিউটি আছে তাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়বে বলে মোবাইলে বিদায় নেয় রাসেল। মঙ্গলবার দুপুরে আবুধাবিতে থাকা এলাকার লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে রাসেল মারা গেছে।


নিজের ভাঙাচোরা ঘর তার পর ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে যে পরিমাণ দেনা হয়েছেন তা পরিশোধ কীভাবে করবেন আর সংসার কীভাবে চলবে এমন কথা বলে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শরীফা বেগম।


নিহত ইউসুফ মিয়ার বড় ছেলে মহিনুল ইসলাম মিলন বলেন, প্রায় ২৫ বছর আগে জীবিকার সন্ধানে আবুধাবি যায় তার বাবা ইউসুফ মিয়া। এরপর থেকে সোফা কারখানাটিতে চাকরি করতেন তিনি। সবশেষ গত ৫ বছর আগে দেশে আসার পর ছুটি শেষে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরে যান।

 

তিনি বলেন, এক বছর আগে মালিকের কাছ থেকে কারখানাটি ক্রয় করে নিজের দেশের শ্রমিক দিয়ে সেটি পরিচালনা করে আসছিলেন বাবা। দীর্ঘ বছর কষ্ট করে একার আয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। ভালো সময় আসার আগে এমন দুর্ঘটনা আমাদের পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।


এদিকে, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে তারেক হোসেন বাদলকে হারিয়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন বাবা মীর হোসেন। চার ছেলের মধ্যে দুইজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এরই মধ্যে চলে গেলেন বাদল।


মীর হোসেন বলেন, কয়েক বছর ওমান থাকার পর ভিসায় সমস্যা হওয়ার কারণে গত বছর দেশে ফিরে আসেন বাদল। একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত একজনসহ তার তিন ছেলে রয়েছে। ৮ মাস আগে এক আত্মীয়র সহযোগিতায় আবুধাবিতে গিয়ে এলাকার ইউসুফের সোফা কারখানায় চাকরির নেয় বাদল। দুই ছেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমার সংসার চালানোর দায়িত্ব তার কাঁধে ছিল। বাদল চলে যাওয়ায় আমাদের পরিবারের সব শেষ হয়ে গেছে।


নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দাবি, যেহেতু আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। শরীরের যেটুকু অংশ রয়েছে সেটুকু যেন বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।


ডুমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন কানন বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঢাকায় থাকার কারণে নিহতদের বাড়িতে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বুধবার (৩১ মে) সকালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নিহতদের বাড়িতে পাঠিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/ঢ/এসএপি

Link copied!