AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কাতারে পাঁচ দেশের ৬৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১২:৩৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
কাতারে পাঁচ দেশের ৬৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু

আজ থেকে এক দশক আগে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের সত্ত্ব পায় কাতার। এরপরই শুরু হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। যার আওতায় নির্মাণ চলছে সুবিশাল স্টেডিয়াম, অতিথিশালা-সহ অন্যান্য সব স্থাপনার। আর এর ব্জন্য দেশটির প্রয়োজন হয় অপেক্ষাকৃত সস্তা মজুরির অভিবাসী শ্রমিকদের। এরপরই সেখানে পৌঁছায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে হাজারো অভিবাসী শ্রমিক।  

এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান৷ জানিয়েছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি অভিবাসী শ্রমিক মারা গেছে বলে।

গার্ডিয়ান জানায়, বিভিন্ন দেশের সরকারি উৎসগুলো থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে৷ সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচ দেশের গড়ে ১২ জন করে শ্রমিক প্রতি সপ্তাহে মারা গেছে৷

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে , বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে পাওয়া তথ্যে ২০১১ থেকে ২০২০ সময়ের মধ্যে কাতারে ওই দেশগুলোর ৫৯২৭ জন অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে৷ আলাদাভাবে কাতারের পাকিস্তান দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্যে ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৮২৪ জন পাকিস্তানি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে৷ যদিও এর সঙ্গে ফিলিপিন্স ও কেনিয়া থেকে কাতারে পাঠানো বিপুল সংখ্যক মারা যাওয়া শ্রমিকদের সংখ্যা যোগ করা হয়নি৷

গত ১০ বছরে কাতার প্রধানত ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে অবিশ্বাস্য নির্মাণ কর্মসূচি শুরু করেছে৷ নতুন সাতটি স্টেডিয়ামের পাশাপাশি বহু বড় প্রজেক্টের নির্মাণ ইতোমধ্যেই শেষ করা অথবা হওয়ার পথে৷ নতুন বিমানবন্দর, সড়ক, গণপরিবহন ব্যবস্থা, হোটেল ও নতুন শহর, সবই বিশ্বকাপের অতিথিদের জন্য জন্য তৈরি করা হয়েছে৷ 

উপসাগরীয় দেশগুলোতে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ফেয়ারস্কয়ার প্রজেক্টের পরিচালক নিক ম্যাকগিহান জানান, মৃত্যুর রেকর্ডগুলো পেশা ও কাজের স্থান অনুযায়ী তালিকাবদ্ধ করা না হলেও যারা মারা গেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বকাপের অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে কাজ করতেন, এটি ধরে নেওয়া যায়৷ 

বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকা শ্রমিকদের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়৷ আয়োজক কমিটির মতে ৩৪ জনের মৃত্যু ‘কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত কারণে’ হয়নি৷ এর মধ্যে এমন বেশ কয়েকজন শ্রমিক স্টেডিয়াম নির্মাণস্থলেই সংজ্ঞা হারিয়ে মারা গেছেন৷ এসব তথ্য ২০ লাখ অভিবাসী শ্রমিকের সুরক্ষায় কাতার যে ব্যর্থ হয়েছে সেটিই তুলে ধরছে৷ মূলত তরুণ শ্রমিকদের এই উচ্চ মৃত্যুর কারণ তদন্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছে কাতার৷ 

মৃত্যুর পরিসংখ্যানের পেছনে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বহু পরিবারের কাহিনী আছে যারা তাদের পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়েছেন৷ এসব পরিবার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছেন আর অনেক পরিবার তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর পরিস্থিতি নিয়েও বিভ্রান্ত৷ 

বাংলাদেশি শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ মিয়া শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত বাসস্থানে খোলা বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসা মেঝেতে জমে থাকা পানি থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান৷ ভারতের মধু বোল্লাপাল্লির পরিবার বুঝেই উঠতে পারছেন না কীভাবে ৪৩ বছর বয়সী স্বাস্থ্যবান লোকটি কাতারে কাজ করার সময় ‘স্বাভাবিক কারণে' মারা গেল৷  

কাতারের নির্মম মৃত্যুর এসব সংখ্যা দাপ্তরিক স্প্রেডশিটের লম্বা তালিকায় কারও নামের পাশে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উপর থেকে পড়ে একাধিক ভোঁতা আঘাত, ফাঁসিতে ঝুলে থাকার কারণে শ্বাসকষ্টে মৃত্যু বা কারও মৃতদেহ পচন ধরায় কারণ নির্ণয় করা যায়নি বলে লেখা আছে৷ তবে সবচেয়ে বেশি আছে তথাকথিত ‘স্বাভাবিক মৃত্যু'; যেখানে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ অথবা শ্বাসতন্ত্র বিকল হওয়াকে দায়ী করা হয়েছে৷

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয়, নেপালি ও বাংলাদেশি শ্রমিকদের ৬৯ শতাংশের মৃত্যুর স্বাভাবিক কারণে হয়েছে৷ গার্ডিয়ানের আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, শ্রেণিবদ্ধকরণ প্রায়ই কোনো ময়নাতদন্ত ছাড়াই করা হয়েছে৷

গার্ডিয়ান জানায়, ২০১৯ সালে গ্রীষ্মকালে কাতারের তীব্র গরম সম্ভবত বহু শ্রমিকের মৃত্যুর উল্লেখযোগ্য একটি কারণ৷ গার্ডিয়ানের পাওয়া তথ্যকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) অনুমোদিত একটি গবেষণাও সমর্থন করেছে৷

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

একুশেসংবাদ/অমৃ

Link copied!