AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের জয় হয়েছ: রাষ্ট্রপতি


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫:২২ পিএম, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের জয় হয়েছ: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আরও উন্নতি করতে হবে। ভবিষ্যতে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘একইসঙ্গে, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সকল গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সংসদ অধিবেশন শুরুর পর ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এ সময় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।  

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কৃষিখাতের উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে, উচ্চ-মূল্য ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে রপ্তানি নিশ্চিত করার জন্য উন্নত কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে হবে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের পণ্যসমূহ রপ্তানি বাজারে যাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর ও কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজারের অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি সম্ভব হয়। আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

রাষ্ট্রপতির ভাষণে উঠে আসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও গণতন্ত্রের শাণিত চেতনা ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সকল পদক্ষেপ স্বার্থক হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা।’

সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনী ও গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।’

উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় জোর দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের মূল ভিত্তি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা। গণতন্ত্রের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হলে উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়। গত দেড় দশকে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বজায় থাকার কারণে দেশের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। উন্নয়ন স্থায়ী ও টেকসই করতে হলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মজবুত, তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা ছড়িয়ে দিতে হবে। উন্নয়নের এ গতিধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্হিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।’

জনগণের চাহিদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের আজ উদ্বোধনী দিন। জাতীয় সংসদ আমাদের গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মূলভিত্তি। জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত মহান এ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের সকল প্রত্যাশার ধারক ও বাহক। তাদের চাহিদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকদের কল্যাণে জাতীয় সংসদ যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সংসদ সদস্যগণ সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। জনগণ অনেক আশা নিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে যাতে তাদের চাওয়া-পাওয়া আপনারা সংসদে তুলে ধরেন। এটাই সংসদ-সদস্য হিসেবে আপনাদের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্য।’

রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর ভাষণে বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদে অনেক সংসদ-সদস্য প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে বয়সে নবীন। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি এবং সংশ্লিষ্ট রীতি-নীতি আয়ত্ত করে তারা দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবেন এটি তাদের নিকট আমার প্রত্যাশা। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের অভিজ্ঞ সংসদ-সদস্যগণ তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নবীন সংসদ-সদস্যদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘গত দেড় দশকের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার ফলে দেশ উন্নতি ও অগ্রগতির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনকল্যাণে গৃহীত সরকারি নীতিসমূহের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে উন্নয়নের এ ধারাকে এগিয়ে নেওয়া। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’

স্থায়ী কমিটিগুলোতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে সংসদ সদস্যদের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘সমাজের সকল নাগরিকের আশা-আকাঙ্ক্ষা, বিভিন্ন গোষ্ঠী, দল ও সংগঠনের চাওয়া-পাওয়া গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমন্বয়সাধন করতে হয় জাতীয় সংসদকে। সংসদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ- আইন প্রণয়ন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিসমূহে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার জন্য আমি সংসদ-সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।’


একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা 
 

Link copied!