বাঙালির স্বাধীনতার মহান নায়ক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি গল্পকার ঔপন্যাসিক আলভীন দীলিপ বাগচীর লেখা বাঙলার স্থপতি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বইটির বিশ্লেষণ মূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ২২ মার্চ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় মোড়ক উন্মোচন ও বইটির বিশ্লেষণ মূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ও প্রতিভাবান লেখক অ্যালভিন দীলিপ বাগচী একজন কবি ও গবেষক। তার রচিত অনেক গ্রন্থের মধ্যে `বাঙলার স্থপতি` বইটি এরই মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশকে জানতে হলে বাংলার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। বাংলাদেশের জন্ম, অতঃপর বঙ্গবন্ধুর সাড়ে ৩ বছরের শাসনকাল এবং বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারসহ হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লেখা এই বইটি পড়লে দেশপ্রেমে আরো উদ্বুদ্ধ হওয়া সম্ভব।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বহু বই প্রকাশিত হয়েছে তবে বাঙলার স্থপতি বইটিতে বাংলা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখক ইতিহাসের সত্য অনেক অজানা তথ্য তুলে ধরেছেন। এই বইয়ের বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি চির সংগ্রামী বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনী কেবল তার নিজের জীবনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। সাত খণ্ডে রচিত বইটিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ইতিহাস থেকে শিরু করে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম, `৫২-এর ভাষা আন্দোলন `৬৬-এর ৬ দফা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং এ বইটির মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর বিস্তার সমসম্পর্কে জানতে পারব।
তিনি আরও বলে, বাঙলার স্থপতি বইটি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে অসাংবিধানিক ক্ষমতা পরিবর্তনে যে কালো অধ্যায়ের সূচনা হয় তার পরিণতিতে দেশে বারবার বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে যে সাম্প্রদায়িকতা ও দ্বিজাতিতত্ত্বের বিভেদ নীতিকে বাংলাদেশের মানুষ কবর দিয়েছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়াস চলে ১৫ আগস্টের পর থেকে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সাদেকুল আরেফিন মতিন উপাচার্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, মোঃ শহীদুল্লাহ খন্দকার প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত গোপালগঞ্জের বর্তমান প্রতিনিধি ও সাবেক সচিব, খাজা মিয়া সচিব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
লেখক তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, বাঙলার স্থপতি বইটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ খণ্ড ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া আমি বর্তমানে আরেকটি বইয়ের কাজ হাতে নিয়েছি। বইটির নাম `পঁচাত্তর হত্যাকাণ্ড-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনুসন্ধান`। এ বইটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে নিয়ে যে ঘৃণ্য ও ন্যক্কারজনক আরেকটি কালো অধ্যায়ের সূচনা থেকে শেষ পর্যন্ত রচিত হয়েছে। বইটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সত্যতা যাচাইয়ের প্রকৃত ইতিহাসনির্ভর একটি বই জাতির কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রয়াস চলছে।
উল্লেখ্য, লেখকের প্রকাশিত বইগুলো হলো- দহন, সমাহার, সেই সব মানুষেরা, খুঁজি তোমাকে ও বাঙলার স্থপতির প্রথম থেকে সপ্তম খণ্ড।
একুশে সংবাদ.কম/বি.এস
আপনার মতামত লিখুন :