অত্যধিক গরমে সবারই নাভিশ্বাস ওঠার দশা। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, আগামী আরও কয়েকদিন এই তাপপ্রবাহ থাকবে। ফলে রাতারাতি গরম থেকে নিস্তার মিলছে না। আর গ্রীষ্মের তো কেবল শুরু। তাই এই গরমে কী করণীয় এবং কী করা যাবে না—উভয়ই জেনে রাখা ভালো।
যে ধরনের সংকট হতে পারে
অত্যধিক গরমের সময় বেশ কিছু সংকট হতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
পানিশূন্যতা। বিশেষত শিশু ও গর্ভবতীদের এ ক্ষেত্রে আলাদা যত্ন নিতে হবে। শিশুরা করণীয় সম্পর্কে বুঝতে পারে না, আর গর্ভে থাকা শিশুও এ সময় ঝুঁকিতে থাকে। এ সময় এমনকি অন্তঃস্বত্তা নারীদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা দেখা যায়।
হিটস্ট্রোক। এতে বিশেষত বয়স্করা আক্রান্ত হতে পারে। তবে যেকোনো বয়সেই এটি হতে পারে, যা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
গরমে যা করবেন না
হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহ চলার সময় কী কী করা যাবে না, সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ কিছু পরামর্শ দিয়েছে।এগুলো হলো—
> সম্ভব হলে গরমে বাইরে বেশি ছোটাছুটি করবেন না
> রোদে বেশি থাকবেন না
> ঘরে বা ঘরের বাইরে অত্যধিক গরম অনুভূত হয়—এমন স্থানে বেশিক্ষণ থাকবেন না
> শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন
> বাইরে বের হওয়ার সময় সঙ্গে পানির বোতল রাখুন।
যা করবেন
অত্যধিক গরমে সবচেয়ে সংকটে থাকে নবজাতক, শিশু, গর্ভবতী ও বয়স্ক মানুষেরা। এ কারণে তাদের বিষয়ে আলাদাভাবে মনোযোগী হতে হবে। শিশুদের শরীর উচ্চ তাপমাত্রায় প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি নাজুক। এ ক্ষেত্রে তারা করণীয় জানে না। তাই তাদের দিকে নজর দেওয়ার দায়িত্ব অভিভাবকদের।
> সবার আগে জানুন দিনের আবহাওয়া কেমন যাবে। পাশাপাশি আগামী কয়েক দিনের তাপমাত্রা ও আবহাওয়া সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়াদির খবর রাখুন। এটি পরিকল্পনা করতে সহায়ক হবে।
> শিশুদের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে বা তাদের অত্যধিক ছোটাছুটি করার ক্ষেত্রে নজর রাখুন।
> ঘরে সব সময় খাবার স্যালাইন মজুত রাখুন।
> ঘরে থার্মোমিটার রাখার চেষ্টা করুন।
> বাইরে বের হওয়ার সময় সঙ্গে পানির বোতল, খাবার স্যালাইনের কয়েকটি প্যাকেট এবং সম্ভব হলে ব্যাটারিযুক্ত ছোট ফ্যান রাখুন।
> সাথে রুমাল বা তোয়ালে রাখুন, যাতে কোনো জায়গা থেকে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর মুঝতে পারেন।
> জরুরি পরিষেবা নম্বরগুলো জেনে রাখুন।
> ছায়ায় থাকার চেষ্টা করুন।
> দিনে কয়েক ঘণ্টা সম্ভব হলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় থাকার চেষ্টা করুন।
> বাইরে ঘোরাফেরা কম করুন। বিশেষত সবচেয়ে বেশি গরম পড়ে—এমন সময় বাইরে না থাকার চেষ্টা করুন।
> পরিশ্রমসাধ্য কাজ অতি আবশ্যক না হলে এ সময়টাতে এড়িয়ে চলুন।
> বাসা–বাড়ির তুলনামূলক ঠান্ডা ঘরটিতে দিনের বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
> ঘরের পর্দা নামিয়ে রাখুন, যাতে ঘর ঠান্ডা থাকে।
> দিনের বেলা জানালা বন্ধ রাখুন। রাতে খুলে দিন।
> প্রচুর পানি ও তরল খাবার খান। এ ক্ষেত্রে তৃষ্ণা লাগার জন্য অপেক্ষা করবেন না।
> গুরুপাক (রিচ ফুড) খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
> হালকা রঙের পাতলা কাপড়ে তৈরি ঢিলেঢালা পোশাক পরিধানের চেষ্টা করুন।
> রাতে সুতির চাদরে ঢাকা বিছানায় ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
আপনার মতামত লিখুন :