ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলের `বড় ভুল ও অপরাধের` শাস্তি চলমান থাকবে এবং তা অব্যাহতভাবেই দেওয়া হবে। সোমবার (২৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সরাসরি যুক্ত হওয়ার পর এটি ছিল খামেনির পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত প্রথম প্রতিক্রিয়া।
বিবৃতিতে খামেনি বলেন, “জায়োনিস্ট শত্রুরা একটি বড় ভুল এবং অপরাধ করেছে। তাদের শাস্তি পেতেই হবে, এবং তারা ইতোমধ্যেই তা পাচ্ছে।”
এর আগে রোববার সকালে ইরানের ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়ে হামলার বিষয়টি প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প লেখেন, “ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা চালানো হয়েছে। অংশগ্রহণকারী সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এককভাবে এটি সম্ভব করেছে। এখন সময় শান্তির।”
আরেক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ফোর্দো কেন্দ্রে ভূগর্ভের ২৬২ ফুট নিচে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, যা কেন্দ্রটিকে ধ্বংস করেছে। পরে এক জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ট্রাম্প আরও বলেন, “এখনো অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে। আজকের টার্গেট সবচেয়ে কঠিন ও বৈধ ছিল। যদি শান্তি না আসে, তাহলে আমরা আরও জোরালো পদক্ষেপ নেব।”
এদিকে ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, হামলার শিকার হওয়া পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর আশেপাশে এখন কোনো তেজস্ক্রিয় উপাদান নেই। এক কর্মকর্তা জানান, ইরান হয়তো হামলার পূর্বেই সেগুলো সরিয়ে ফেলেছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৩ তারিখ ভোররাতে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আগাম হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, সম্ভাব্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানও। ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে চলমান এই সংঘাত আজ দশম দিনে গড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েল জানিয়েছে, সংঘাতে তাদের অন্তত ২৪ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সংঘাত শুরুর পর থেকে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪৩০ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি বলছে, ইরানে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি—৬৫৭ জন।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এ.জে