ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশের চারটি টেলিভিশন চ্যানেল—যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন এবং মোহনা টিভির ইউটিউব চ্যানেল সে দেশে বন্ধ করে দিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। ভারত সরকারের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক সংস্থা ডিজিটালি রাইট-এর প্রকল্প ডিসমিসল্যাব।
শুক্রবার (৯ মে) রাতে প্রকাশিত ডিসমিসল্যাব-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের দর্শকেরা এখন থেকে এই চারটি চ্যানেলের ইউটিউব কনটেন্ট দেখতে পাচ্ছেন না। ভারতীয় সার্ভার বা আইপি ঠিকানা থেকে প্রবেশের চেষ্টা করলে ইউটিউবে বার্তা দেখা যাচ্ছে:
“এই কনটেন্টটি বর্তমানে এই দেশে প্রবেশযোগ্য নয়। কারণ, এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সরকারি আদেশের আওতায় রয়েছে।”
যমুনা টিভির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছে, ইউটিউব থেকে চ্যানেল ব্লক–সম্পর্কিত একটি আনুষ্ঠানিক নোটিশ তারা পেয়েছে। অন্য চ্যানেলগুলো এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ডিসমিসল্যাব জানায়, তারা নয়াদিল্লি ও কলকাতাভিত্তিক সাংবাদিকদের মাধ্যমে এসব চ্যানেলের ইউটিউব লিংক যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে যে ভারতে চ্যানেলগুলো নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তাদের পাঠানো স্ক্রিন রেকর্ডও সেই তথ্য নিশ্চিত করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারত সরকার সম্প্রতি দ্য ওয়ার ইন্ডিয়া নামক স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটও নিজ দেশে ব্লক করেছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে একে ভারতের সংবিধানে প্রদত্ত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, ভারত সরকার তাদের কাছে ৮,০০০–এর বেশি অ্যাকাউন্ট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বাধীন সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের অ্যাকাউন্টও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। এর আগে ভারত এক ডজনের বেশি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের অ্যাকাউন্টও ব্লক করেছে।
এই পদক্ষেপ ঘিরে ভারতে বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :