AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পথের ধারে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় সোনালু ফুল


Ekushey Sangbad
সায়েম খান, মানিকগঞ্জ
০৪:১৯ পিএম, ১৩ মে, ২০২৩
পথের ধারে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় সোনালু ফুল

হলুদ রঙের এই ফুলের নাম সোনালু। কিশোরীর কানের দুলের মতো বৈশাখী হাওয়ায় দুলতে থাকে হলুদ-সোনালি রঙের ঝোপা-ঝোপা এই ফুল। সবুজ কচি পাতার ফাঁকে হলুদ বর্ণের সোনালু ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলেছে।

 

মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক-মহাসড়ক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বন জঙ্গলে ও গ্রামীণ রাস্তার ধারে ছোট বড় সোনালু গাছ দেখতে পাওয়া যায়। আবার ফুলের ফাঁকে দেখা যায় লম্বা লম্বা ফল। সোনালু ফুল হলুদবরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখে পরিবেশ।

 

সোনালু কে অনেকে আঞ্চলিক ভাষায় বানরলাঠি বা বাঁদরলাঠি নামেও ডাকে। পূর্ব এশিয়া থেকে আগত এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ক্যাশিয়া ফিস্টুলা। ইংরেজি নাম গোল্ডেন শাওয়ার। সোনালী রঙের ফুলের বাহার থেকেই ‘সোনালু’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ ফুলের নাম দিয়েছিলেন অমলতাস। হিন্দিতেও এর নাম অমলতাস।

 

মানিকগঞ্জ জেলার সব উপজেলাতেই সোনালু গাছটি একসময় অনেকের চোখে পড়তো কিন্তু কালের বিবর্তনে গাছটি এখন আর কেউ রোপন করেনা দেখে বিলুপ্তপ্রায়। তবে বন বাদারে এই বৃক্ষটি তার ফলের বীজ থেকেই প্রাকৃতিক নিয়মে ঝোপ জঙ্গল পথে প্রান্তরে জন্মে উঠে। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে এই বৃক্ষটি এখন বিলুপ্তর পথে।

 

সোনালু বৃক্ষটি এখন বর্তমানে কেউ রোপন করেনা। ফলে এটি এখন মাঝে মধ্যে চোখে পড়লেও তা সংখ্যায় খুবই কম। জানা গেছে বনবিভাগের কর্মকর্তারাদেরও এই বৃক্ষটির চাড়া তৈরী ও রোপনের উদ্যোগ নাই।

 

শিবালয় উপজেলার সোহেল রানা নামের এক ব্যক্তি বলেন, গাছে গাছে ফুটেছে সোনালু ফুল। সোনালু ফুল সবার চোখেই ভালো লাগে। শৈশবে স্কুলে যাওয়ার পথে এই গাছের লম্বা ফল যাকে বান্দরলাঠি বলা হয় সেগুলো গাছ হতে পেরে আমরা খেলায় মেতে উঠতাম।

 

পথচারী সবুজ মোল্লা বলেন, আগামী প্রজন্ম হয়তো বলতেই পারবেনা এই ফুলের কথা। আমরা ছোটবেলায় রাস্তার পাশেই অনেক সোনালু বৃক্ষ দেখতাম। স্কুল ছুটির পর বন্ধুরা মিলে গাছ হতে ফুল নিয়ে একজন আরেক জন সহপাঠীকে দিয়ে অনেক আনন্দ করতাম।

 

ঘিওর উপজেলার মো. ফয়সাল বলেন, ছোট বেলায় এই গাছ অনেক দেখতাম কিন্তু আজ তা কেবলই স্মৃতি। সোনালু গাছ সাধারণত যত্ন করে লাগানো হয় না বরং সে নিজে থেকেই বেড়ে ওঠে অযত্ন অবহেলায়। এই গাছে যখন ফুল ফোটে তখন সবারই দৃষ্টি পড়ে। বেড়ে ওঠার সময় তেমন দৃষ্টিতে না পড়লেও ফুল ফোটার পর দেখে সবার মন-প্রাণ প্রশান্তিতে ভরে যায়।

 

হরিরামপুর উপজেলার পরিবেশবাদী সংগঠন হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গের সাধারণ সম্পাদক  প্রণব পাল বলেন, সোনালু ফুল স্থানীয়ভাবে  বাদরলাঠি ফুল নামেও পরিচিত। এই গাছটির সৌন্দর্য্য গুনের পাশাপাশি  ভেষজ গুণও রয়েছে। নিকট অতীতে বাংলাদেশের বন জঙ্গলে এমনকি বসতবাড়িতেও এ ফুল গাছ অনেক থাকলেও বর্তমানে সংখ্যাটা আশংকাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশীয় প্রজাতির ফুল ও ফল গাছের গুরত্ব অনেক।

 

তিনি আরও বলেন, হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ দেশীয় ফুল ফল ও ঔষধি গাছ রক্ষায় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে গত দুই বছরে হরিরামপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দুই শতাধিক সোনালু গাছ রোপণ করেছে। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিবেচনায় বৃক্ষরোপণ না করে পরিবেশের ভারসাম্য বিবেচনায় সোনালু গাছের মতো অন্যান‍্য দেশীয় ফুল ফল ও ঔষধি গাছ রোপণে  আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

 

মানিকগঞ্জ সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বনজ গাছ রোপণের পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধক গাছ রোপণ ও চারা উৎপাদন করি। বিশেষ করে সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, জারুল এরকম বিলুপ্তপ্রায় গাছ রোপণের পরামর্শ দিয়ে আসছি। বৃক্ষ মেলা এবং প্রাইভেট নার্সারীকে বিলুপ্তপ্রায় গাছ রাখতে উদ্বুদ্ধ করি। সরকারি নার্সারী গুলোতেও আমরা প্রতিনিয়ত সোনলু এবং আরো অনেক বিলুপ্তপ্রায় গাছ রয়েছে সেগুলো সংগ্রহ করতে বলি। আমাদের সবার উচিত আমাদের বাড়ির আঙিনায় বা খালি জায়গায় এ ধরনের সৌন্দর্যবর্ধক গাছ রোপণ করা।

 

 একুশে সংবাদ.কম/সা.খা/বি.এস

Link copied!