উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে যেসব শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল, তাদের বহিষ্কারাদেশ শর্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার করেছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)। শনিবার (২১ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. জুলফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বহিষ্কারাদেশ পুনর্বিবেচনা করে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করা হলেও ‘সাসপেন্ডেড এক্সপালশন’ নীতির আওতায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে পারবে। তবে ভবিষ্যতে আচরণবিধি ভাঙলে বহিষ্কারের আদেশ আবার কার্যকর হবে।
এ সিদ্ধান্তের আগে শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামে ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা। বিকেলে পুলিশ বাধা দিলে তারা মূল সড়ক থেকে সরে এসে পাশেই অবস্থান নিয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান চালায়। দাবি পূরণ না হলে তারা আমরণ অনশন ও সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা শুধু বহিষ্কার নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলনে আছেন। এ দাবিতে তারা রোববার (২২ জুন) সকাল ১০টা থেকে আবারও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।
এছাড়া সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার সময় পুলিশ তাদের প্রতি বলপ্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রয়োজন হলে থানাও ঘেরাও করা হবে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি:
১. অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্তভাবে বহিষ্কার প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণ প্রদান
২. বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি
৩. ইউআইইউ-তে চলমান প্রশাসনিক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে সংস্কার বাস্তবায়ন
৪. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন
৫. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আরোপিত ১৫% ভ্যাট বাতিল
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে চলমান অসন্তোষের জেরে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। এরপর ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। যদিও পরে অনলাইন ক্লাস চালু করা হলেও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে