আন্তর্জাতিক বাজারেই বেড়েছে জ্বালানী তেলের দাম। তবে দেশে ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ার পর তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি ও অটোগ্যাস) দামও বাড়ল। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধির পরই সিলিন্ডার প্রতি (১২ কেজির) এলপিজির দাম ৫৪ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা এলো।
ডিজেলের দাম বাড়ায় গণপরিবহন, শিল্প এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বাড়বে। কেরোসিন এবং এলপিজির মূল্য বৃদ্ধিতে গ্রামে-শহরে রান্নায় জ্বালানি খরচ বাড়বে। একইসঙ্গে অটোগ্যাসে চালিত ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি খরচও বাড়তে যাচ্ছে।
বিশ্ব বাজারে তেল-গ্যাসের দাম বাড়তে থাকায় মূল্য সমন্বয়ের অংশ হিসেবে দেশে এ দাম বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
জ্বালানি বিষয়ক সবগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থা তেল ও গ্যাসের দাম অন্তত আগামী এক বছর বাড়তে থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী বছরের জুন নাগাদ প্রতি ব্যারেল (প্রায় ১৫৯ কেজি) অপরিশোধিত তেলের দাম ১২০ মার্কিন ডলারে পৌঁছবে বলে সংবাদ সংস্থা সিএনএন গতকাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
বিইআরসির ঘোষণা অনুযায়ী, দেশে প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা দাম মূসকসহ ১০৯ টাকা ৪২ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। অক্টোবরে এটি ছিল ১০২ টাকা ৫৪ পয়সা। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১২৫৯ থেকে বেড়ে ১ হাজার ৩১৩ টাকা হয়েছে। এর আগে অক্টোবরে সিলিন্ডার প্রতি দাম ২২৬ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। অর্থাৎ দুই মাসে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৮০ টাকা বাড়লো। তবে উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় পরিবর্তিত না হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানির এলপিজির দাম এ মাসে পরিবর্তন করা হয়নি। সরকারি সাড়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম আগের ৫৯১ টাকাই থাকছে।
গাড়িতে ব্যবহৃত প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ৫৮ টাকা ৬৮ পয়সা থেকে বেড়ে ৬১ টাকা ১৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তা জানান, দেশের জ্বালানি খাতের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দাম বাড়তে থাকায় দেশেও মূল্য সমন্বয় করা জরুরি হয়ে পড়েছে। গত সোমবার ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য প্রতি লিটার ১২৪.৪১ টাকা বা ১০১.৫৬ রূপি ছিল অথচ বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ লিটার প্রতি ৫৯.৪১ টাকা কম ছিল।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেশে গ্যাসের দামও এখন অনেক কম। দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামও এখন বেশি বলে এখনই গ্যাসের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিরও শঙ্কা আছে। আর তেল-গ্যাসের দাম বাড়লে পরে অবধারিতভাবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে।
একুশে সংবাদ/আল-আমিন
আপনার মতামত লিখুন :