দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করেছে বাংলাদেশ ও ভুটান। এই প্রথম কোনও একটি দেশের সঙ্গে এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করলো সরকার।
রোববার বাংলাদেশকে ভুটানের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক দিনে এই অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই হয়। নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থ-বাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সংযুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে এই চুক্তি সইয়ের ফলে বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। আর ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে পণ্য সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা থেকে বেড়ে ৫৭ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।
ভুটানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, প্লাস্টিক, ওষুধ, গৃহসজ্জাসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী রপ্তানি করে থাকে। আর ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর, সবজি-ফলমূল, নির্মাণসামগ্রী, ক্যামিক্যালস ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পিটিএ হলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক বিনা শুল্কেই ভুটানে যাবে। এ ছাড়া পাট ও পাটজাতীয় পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, ফ্যান, ব্যাটারি, কনডেন্সড মিল্ক, সিমেন্টসহ বিভিন্ন পণ্যেও শুল্কমুক্ত সুবিধা মিলতে পারে। ভুটান থেকে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধায় অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম দামে পাথর, কাঠ, ফল ইত্যাদি আমদানি করতে পারবে।
ভুটানের পর থাইল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া, আরও ১৭টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা করছে সরকার। এসব দেশের মধ্যে আছে—ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ফিলিস্তিন, ব্রাজিল, চীন, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। এসব দেশের সঙ্গেও নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে এফটিএ শাখাকে শক্তিশালী করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান। ঐতিহাসিক দিনটি সামনে রেখে ৬ ডিসেম্বর চুক্তি সই হয়।
একুশে সংবাদ/এআরএম
আপনার মতামত লিখুন :