হাজারো খানাখন্দ আর চোরাই গর্তে সয়লাব হয়ে গেছে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়কসহ বেশির ভাগ সড়ক। এসব সড়ক রামগঞ্জবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। শহরের প্রায় সব রাস্তায় বিশাল গর্তের কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তগুলোতে কাদা-পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে দূরপাল্লার পরিবহনসহ স্থানীয় যানবাহন চলাচলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে দুর্বিষহ সময় পার করছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সড়কটি মেরামতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ লক্ষ্মীপুর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
কোথাও কোথাও রাস্তার বড় অংশ দেবে যাওয়ায় দূরপাল্লার বাস, ট্রাক ও মালবাহী যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। কিছু জায়গায় ইটের খোয়া দিয়ে গর্ত পূরণ করা হলেও নিম্নমানের কাজের কারণে দ্রুত তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরা সময়মতো যেতে পারছে না, মুমূর্ষু রোগীদেরও পৌঁছানো যাচ্ছে না হাসপাতালে। দুর্ঘটনাও নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
সওজ রামগঞ্জ দপ্তরের উপ-প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর–হাজীগঞ্জ সড়কের রামগঞ্জ অংশটি তিন ভাগে বিভক্ত। দক্ষিণাংশে মীরগঞ্জ থেকে রামগঞ্জের জোড়কবর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, উত্তরাংশে ফকিরবাজার থেকে সেনাপুর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এবং রামগঞ্জ বাইপাস সড়ক ১ কিলোমিটার—সবমিলিয়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার অংশ রামগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে গেছে।
ঢাকা–রামগঞ্জ, ঢাকা–লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম–চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রামগঞ্জ–চাঁদপুরগামী ভারী যানবাহনসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বাণিজ্যিক লরির চলাচল হওয়ায় এ সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই সড়ক। শহরাঞ্চলে সড়কটির পাশে রয়েছে প্রায় ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রামগঞ্জ সরকারি কলেজ, রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রামগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সড়কের বেহাল অবস্থায় শিক্ষার্থী ও রোগীসহ সকলকেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সিএনজি চালক বাবুল হোসেন বলেন,“দুই সপ্তাহ আগে আমার অটোরিকশা গর্তে পড়ে উল্টে যায়, যাত্রী আহত হন। প্রায়ই এমন হচ্ছে, কিন্তু কোনো মেরামত হয় না।”
গৃহবধূ জান্নাত আক্তার বলেন,“বাচ্চাকে স্কুলে নিতে গিয়ে রাস্তায় জ্যামে ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকি। রাস্তায় ধুলো, গর্ত—সব মিলিয়ে কষ্টের শেষ নেই। রামগঞ্জ চৌরাস্তায় একবার জ্যাম হলে মনে হয় ঢাকার মগবাজারে আছি।”
এ বিষয়ে সওজ রামগঞ্জ দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন বলেন,“সড়কটির দক্ষিণাংশে ওয়ার্কঅর্ডার হয়েছে, উত্তরাংশের টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টির কারণে আপাতত মেরামতের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।”
একুশে সংবাদ/এ.জে
 
    
 
                        

 
                                         
                                             
                                                        
                             একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
                                             
                                             
                                             
                                            
