নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পারে শহর ও বন্দরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত সংযোগ সেতু "কদমরসুল সেতু" বিদ্যমান নকশা অনুযায়ী সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে বন্দরবাসী।
মঙ্গলবার (১ জুলাই)দুপুরে ৫নং ঘাটস্থ শীতলক্ষ্যা সেতু বাস্তবায়ন নাগরিক আন্দোলনের ব্যানারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন এস এম আব্দুস সালাম, আবুল কালাম আহমাদ, মোঃ মাঈন উদ্দিন মানিক, অ্যাডভোকেট মোঃ শরীফুল ইসলাম শিপলু, ডাক্তার ফারুক হোসেন, কাজী সুজন, মোঃ আলমগীর, এডভোকেট আসিফুজ্জামান, গোলাম মোর্শেদ, হানিফ হোসেন, মোঃ আলআমিন, সৈয়দ গোলাম রসুল (রনি), নাসির আহমদ, সুলতান খান, হাবিবুর রহমান, আব্দুল ওহাব প্রমুখ।
স্মারকলিপি প্রদানকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বন্দর থানা প্রায়ই ৬ লক্ষ জনসংখ্যা ও প্রায় ৫ লক্ষ ভোটার সংবলিত এলাকা। এই এলাকার বন্দরের মানুষের প্রাণের দাবি সদর বন্দরের সংযোগ স্থল বন্দর ঘাট সংলগ্ন বা ৫ নং ঘাট দিয়ে একটি শীতলক্ষ্যা সেতু। এই একটি সেতুর অভাবে বন্দরের মানুষ যুগের পর যুগ ঝড় বৃষ্টি বাদল সহ নানা প্রতিকূলতার মধ্যে শহরের নাগরিক সেবার জন্য নদী পারাপার হতে হচ্ছে। বিগত সকল সরকারে প্রতিশ্রুতি থাকলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছর হলেও অদ্যাবধি বন্দরের মানুষের কল্যাণে সদর বন্দর সংযোগের সেতুটি বাস্তবায়ন হয়নি।
সম্প্রতি ৫নং ঘাট দিয়ে একটি সেতু নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা কিছু লোক সহ বন্দরের মানুষের আকাঙ্ক্ষার সাথে কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই এমন কিছু লোক শুধু মাত্র নারায়ণগঞ্জ শহর যানজট বৃদ্ধি পাওয়াব ভুয়া অজুহাতে উক্ত সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিরোধিতা চালাচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি অপতৎপরতা। তাদের চাহিদার সাথে বন্দরের বিশাল জনপথের মানুষের আকাঙ্ক্ষার কোনো মিল নেই।
রাস্তা অবৈধ দখল করে ব্যবসা করার লক্ষ্যে এবং বন্দরকে অবহেলিত করে রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ ও উদ্দেশ্য। শহরের ভিতরে অটো, সিএনজি, ট্রাক বাসস্ট্যান্ড দিয়ে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে রাখা হয়। নারায়ণগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ চাষাড়া, গলাচিপা, ১ ও ২ নং রেলগেটের রেল ক্রসিং যানজটের অন্যতম কারণ। অবৈধ স্ট্যান্ড অপসারণ এবং রেল ক্রসিংগুলোতে ওভার/আন্ডারপাস নির্মাণের মাধ্যমে শহরকে শতভাগ যানজট মুক্ত করা সম্ভব। এসকল বিষয়ে উপেক্ষা করে বন্দর বাসির প্রাণের দাবি শীতলক্ষ্যা সেতুর কাজ বন্ধ করে বন্দরের মানুষকে সুবিধাবঞ্চিত করে অবহেলিত রাখে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি করাই যেন বিশেষ শ্রেণির লোকজনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য। বিকল্প চিন্তা না করে যানজটের মতো সমাধানযোগ্য তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে ৫ নং ঘাট দিয়ে (কদম রসুল সেতু) সেতুর কাজ বন্ধ করার পাঁয়তারা বন্দরের মানুষের দাবি ও অধিকারের সাথে বিরুদ্ধাচরণ মাত্র। লক্ষ লক্ষ মানুষের দুঃখের কষ্টের কথা চিন্তা করে নাগরিক সুযোগ সুবিধা পেতে পারে তার জন্য বিদ্যমান নকশায় শীতলক্ষ্যা সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানানো হয়।
নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, কদমরসুল সেতুর টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। তবে জমি নিয়ে কিছু জটিলতা থাকায় কাজ শুরু হয়নি। আশা করছি দ্রুত জটিলতা নিরসন করে বিদ্যমান নকশা অনুযায়ী সেতুর কাজ শুরু হবে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে