নড়াইল সদর উপজেলার ভওয়াখালী নতুন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নিচতলায় তাস খেলাকে কেন্দ্র করে আশরাফুল ইসলাম মুসা (৪৩) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় মামলার মূল আসামি মোঃ ইয়ার আলী বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল ২০২৫ সকাল আনুমানিক ৭টা ৪৫ মিনিটের সময় তাস খেলার এক পর্যায়ে ভিকটিম আশরাফুল ইসলাম মুসার সঙ্গে আসামিদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মোঃ ইয়ার আলী বিশ্বাস অন্যান্য আসামীদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, “সালারে ধর, ওকে খুন করে আমাদের সাথে তর্ক করার মজা দেখাই।”
তাৎক্ষণিকভাবে আসামি সিনহা বিশ্বাস মুসার মাথা ধরে, আরিফুল বিশ্বাস ডান পা এবং পরশ বাম পা চেপে ধরে। এরপর মোঃ ইয়ার আলী বিশ্বাস তার কোমর থেকে গোজা ধারালো ছুরি বের করে মুসার বুকের ডান পাশে আঘাত করে, যা সরাসরি বুকের ভিতর ঢুকে যায়। ভিকটিম ছটফট করতে থাকলে সিনহা বিশ্বাস লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে এবং পরশ রড দিয়ে তার বাম হাতে আঘাত করে। অন্য আসামিরা কিলঘুষি মারতে থাকে। ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে পড়লে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আশপাশের লোকজন, পরিবহন শ্রমিক লিটু সরদার এবং টার্মিনালের নৈশপ্রহরী মোঃ আশিকুর রহমান খান রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিমকে তোষকের ওপর পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুসাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীরের নির্দেশে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয় এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
এ ঘটনার জের ধরে শনিবার (২৮ জুন) সদর থানার এসআই নয়ন বিশ্বাস এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে মামলার ১ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি মোঃ ইয়ার আলী বিশ্বাস (৩৫) ও অজ্ঞাতনামা আসামি কমরুল বিশ্বাস (৫০)–কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর মোঃ ইয়ার আলী বিশ্বাস আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
নড়াইল জেলা পুলিশের সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে