AB Bank
  • ঢাকা
  • শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনে সমস্যা বিদ্যমান, আধুনিকায়নের দাবি



পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনে সমস্যা বিদ্যমান, আধুনিকায়নের দাবি

দিনাজপুরের খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ও রেলওয়ে জংশনখ্যাত উপজেলা পার্বতীপুর। এই উপজেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ রেলওয়ে জংশন, যা মূলত পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশন নামেই পরিচিত। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরনো এই জংশনটিতে আজও আধুনিকতার তেমন ছোঁয়া লাগেনি। দীর্ঘদিন ধরে এটি জোড়াতালি দিয়ে সংস্কারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই রেলওয়ে জংশনটির আধুনিকায়নের দাবি দীর্ঘদিনের।

জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে জংশন হলো পার্বতীপুর। চারটি লাইনের সংযোগস্থল এই জংশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত ট্রেন চলাচল করে এবং হাজার হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জংশন থেকে প্রতি বছর যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও তার তুলনায় এর উন্নয়ন খুবই সীমিত।

বর্তমানে জংশনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে যাত্রীদের। আগে এখানে ঠান্ডা ও গরম পানির ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে তীব্র পানীয়জলের সংকট। ছাদ ও সেড মেরামত করা হলেও বর্ষা মৌসুমে প্লাটফর্মগুলো বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে পড়ে। ২ নম্বর প্লাটফর্মে একটি ছোট গণশৌচাগার নির্মিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং অধিকাংশ সময় অকার্যকর। ফলে যাত্রীদের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়।

১ নম্বর প্লাটফর্মে ওয়েটিং রুম থাকলেও অধিকাংশ সময় তা বন্ধ থাকে। নির্ধারিত অনুসন্ধান কেন্দ্র না থাকায় ট্রেন সংক্রান্ত তথ্য পেতে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া, প্লাটফর্মজুড়ে হকারদের উপদ্রব দীর্ঘদিনের। বেশিরভাগ হকার খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। ট্রেন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনের প্রবেশ নিষেধ থাকলেও মোটরসাইকেল নিয়ে এক শ্রেণির মানুষ নির্বিঘ্নে প্রবেশ করছে এবং জংশনের ভেতরেই পার্কিং করছে।

এছাড়া, জংশন এলাকায় কিছু অবাঞ্ছিত লোকের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা যায়, যারা মূলত সুযোগ সন্ধানী। এ বিষয়ে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, “পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখানে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।”

পার্বতীপুরে রয়েছে মধ্যপাড়া পাথর খনি, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, শহীদ মাহবুব সেনানিবাস, ল্যাম্প হাসপাতাল, রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা, ডিজেল কারখানাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং বহিরাগত যাত্রীদের চলাচলের প্রধান কেন্দ্রও এই রেলওয়ে জংশন।

তবে এখানকার আন্তঃনগর ট্রেনের আসন সংখ্যা অন্যান্য এলাকার তুলনায় কম, যা যাত্রীদের ভোগান্তির অন্যতম কারণ। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

রেলওয়ে জংশনের পাশে অবস্থিত রেলওয়ে পার্কটির অস্তিত্বও আজ বিপন্ন। নামের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হলে এটি স্থানীয়দের জন্য একটি চিত্তাকর্ষক স্থান হতে পারে।

জংশন সংলগ্ন শহরের অধিকাংশ ভূমি রেলওয়ের মালিকানাধীন। ফলে এখানে গড়ে তোলা সম্ভব একটি দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক রেলওয়ে জংশন। প্রয়োজন শুধু যথাযথ পরিকল্পনা ও সরকারি সদিচ্ছার।

উপসংহারে বলা যায়, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ এই রেলওয়ে জংশনকে আধুনিকায়ন করে একটি আন্তর্জাতিক মানের জংশনে রূপান্তরের দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসীর। এখন সময় হয়েছে সেই দাবির বাস্তবায়নের।

 

একুশে সংবাদ/দি.প্র/এ.জে

Link copied!