মিথ্যা খবর প্রকাশ ও মামলা করার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে শেরপুরের কথিত সাংবাদিক আবু হানিফ মোহাম্মদ নোমান (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। ৩ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণপুর মহল্লায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ ৪ জুন বুধবার দুপুরে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
জানা যায়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইদ্রিস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের কর্মকর্তাদের কাছে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একাধিকবার মিথ্যা খবর প্রকাশ ও মিথ্যা মামলায় আসামি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। গত ২৩ মে ইদ্রিস গ্রুপের মিডিয়া কর্মকর্তা রাজাদুল ইসলাম বাবুর কাছে চাঁদা দাবি করেন মিথা খবর প্রকাশ ও মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং চাঁদা না দিলে ইদ্রিস কোম্পানি কোমর ও পা ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দেন কথিত সাংবাদিক নোমান। এ ঘটনায় রাজাদুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে সদর থানায় ৩ জুন চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায়সহ হুমকি প্রদানের অভিযোগে বিতর্কিত কথিত সাংবাদিক নোমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে কথিত এই সাংবাদিক আবু হানিফ মোহাম্মদ নোমান দীর্ঘদিন ধরে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আসছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোমানের বেশি কিছু অডিও ক্লিপ (কল রেকর্ড) ভাইরাল হয়। এতে নোমান এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি নোমান শেরপুরের ওয়ান পিস। আমি একবারের বেশি কাউকে ফোন দেই না, আমি ডিসিকেও একবারের বেশি ফোন দেই না, ডিসি ফোন না ধরলে ডিসির চাকরি খেয়ে দেই। শেরপুরের ডিসিকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এছাড়াও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিবর্গ উপদেষ্টা, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকসহ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তাদের জড়িয়ে অপপ্রচার ও চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। এ সংক্রান্ত একাধিক ভয়েস রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকতার মহান পেশাকে কলুষিত করা এ আবু হানিফ মোহাম্মদ নোমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠছিল।
এ ব্যাপারে শেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা বলেন, সাংবাদিকতায় কেউ আসলে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু একটি আইডি কার্ড সংগ্রহ করে কেউ সাংবাদিক দাবি করে মানুষকে হয়রানি ও চাঁদাবাজি করার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারি না। এসব কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে মহান এ কাজকে যারা কলুষিত করবে তার পাশে আমরা দাঁড়াতে পারি না। বরং আমরা এ অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়দুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ শে.প্র/এ.জে