চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হরিহরনগর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দুই দফায় ৫৪ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করেছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১১ জন, নারী ১৯ জন এবং শিশু রয়েছে ২৪ জন।
রবিবার (২৫ মে) ভোর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নোনাগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা সীমান্ত থেকে তাদের আটক করে।
বিজিবির মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রথম দফায় হরিহরনগর সীমান্তের ৬১ নম্বর মেইন পিলার এবং সাব পিলার ২ নম্বর এলাকা দিয়ে ৪৫ জনকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় আটক করা হয়। তারা নবদুর্গাপুর মাঠে ৪০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থান করছিলেন।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন: ৮ জন পুরুষ, ১৬ জন নারী ও ২১ জন শিশু।তারা সবাই বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা—যেমন নড়াইল, খুলনা, কিশোরগঞ্জ ও ঝিনাইদহ। তারা জানিয়েছেন, ভারতের গুজরাট রাজ্যে তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। সম্প্রতি হরিয়ানা পুলিশ তাদের বাড়িঘর ভেঙে দিলে তারা গৃহহীন হয়ে পড়েন এবং বাধ্য হয়ে বিএসএফ-এর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ২৫ মে রাত আড়াইটার দিকে বিএসএফ সদস্যরা ৬২ নম্বর মেইন পিলারের কাছে সীমান্তে কাঁটাতারের গেট খুলে দিয়ে তাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। এরপর বিজিবি কুসুমপুর বিওপি ক্যাম্পের হাবিলদার শিশির হালদারের নেতৃত্বে তাদের আটক করে।
অপরদিকে, একই দিন ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পৃথক আরেক অভিযানে জীবননগর সীমান্তের ৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে নবদুর্গাপুর মাঠ থেকে আরও ৯ জনকে আটক করে বিজিবি।
এই দলে ছিলেন: ৩ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ৩ জন শিশু।
তারা জানান, হরিয়ানা পুলিশ তাদের ২৪ মে রাতে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে আসে এবং পরদিন সকালে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।
আটককৃতদের মধ্যে নড়াইলের বাবুল মল্লিক বলেন, “আমরা পরিবারসহ গুজরাটে অনেক বছর ধরে বাস করছিলাম। হঠাৎ বাড়ি-ঘর ভেঙে দেওয়ায় আমরা গৃহহীন হয়ে পড়ি এবং বাধ্য হয়ে বিএসএফ ক্যাম্পে আত্মসমর্পণ করি। পরে তারা রাতের অন্ধকারে আমাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।”
রবিবার রাতে আটককৃতদের জীবননগর পাইলট হাইস্কুলের হলরুমে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, “বিজিবি ৫৪ জন অনুপ্রবেশকারীকেঅবৈধভাবে দেশে প্রবেশের অভিযোগে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
একুশে সংবাদ/চু.প্র/এ.জে