কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নবম শ্রেণির স্কুলছাত্রী নিজ কন্যাসন্তানকে হত্যা করেন আপন বাবা-মা।
পরে সন্তানকে হত্যার দায়ে বাবা জাহিদুর ইসলামসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১২ মার্চ) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকার মো. জাহিদুল ইসলামের কন্যা জান্নাতি খাতুনকে গত ১০ মে ২০২৫ তারিখ গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তি হত্যা করে বাড়ির আনুমানিক ১০০ গজ সামনে ভূট্টা ক্ষেতের পাশে ফেলে রাখে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে উক্ত সংবাদ কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের চাচা মো. খলিল হক (৫৫) বাদি হয়ে কুড়িগ্রাম থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহার প্রাপ্তির পর কুড়িগ্রাম থানার একটি চৌকস টিম উক্ত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের একপর্যায়ে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে ভিকটিমের পিতা মো. জাহিদুল ইসলামের সাথে তার প্রতিবেশী মজিবরগংদের ৩২ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে এবং জাহিদুল ইসলাম তার প্রতিপক্ষ মজিবরগংদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার তারিখ ১০/০৫/২৫ইং রাত্রি ৩টা থেকে ৬টার মধ্য যে কোনো সময় তার স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীর সহযোগিতায় হলোখানা কাগজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী নিজ কন্যা জান্নাতি খাতুনকে রড ও দা দিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপাইয়া হত্যা করে ভুট্টা খেতে ফেলে রাখে এবং খরের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ওসি ডিবি বজলার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার তদন্তকারী অফিসার কুড়িগ্রাম থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ ও ডিবি পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান শুরু করে মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে উক্ত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনসহ মূল ঘাতক ভিকটিমের পিতা মো. জাহিদুল ইসলাম (৪৫), ভিকটিমের মা মোছা. মোর্শেদা বেগম (৩৮) ও ভিকটিমের চাচি মোছা. শাহিনুর বেগমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেন এবং আসামি জাহিদুলকে সাথে নিয়ে তার দেখানো বাড়ির পার্শ্বের বাঁশঝাড়ে মাটির নিচে পোতা অবস্থায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২০ মি.লি. লোহার রড (লম্বা ৩৩ ইঞ্চি) ও একটি দা উদ্ধার করেন। ৩ জন আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলা তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে