AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ধনাগোদা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে ফসলি জমি, বসতবাড়ি- দুঃশ্চিন্তায় এলাকাবাসী



ধনাগোদা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে ফসলি জমি, বসতবাড়ি- দুঃশ্চিন্তায় এলাকাবাসী

চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার কাজীর বাজার লঞ্চঘাট এলাকাটি ধনাগোদা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য বসতবাড়ী এবং কয়েকশত একর ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে ৩টি গ্রামের প্রায় একহাজার একর ফসিল জমি এবং কয়েকশ বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

দুঃশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ না নিলে ৩টি গ্রাম রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

উক্ত স্থানে গিয়ে জানা গেছে, ধনাগেদা নদীর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে মতলব পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাজিরবাজার লঞ্চঘাটটি। হুমকির মুখে রয়েছে শোভনকর্দী, মুনছবদী ও মোবারকদী এলাকার প্রায় এক হাজার একর ফসিল জমি। এই এলাকায় বিগত ১৫ বছরে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ৫ শত একর ফসিল জমি এবং হারিয়েছে শতাধিক ভিটে বাড়ি।

বর্তমানে কাজীর বাজার সংলগ্ন শোভনকর্দী, মুনছবদী, মোবারকদী গ্রামের বসতবাড়ি,৩টি মসজিদ, ২টি মাদরাসা, ১টি প্রাইমারি স্কুল ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

এখনি ভাঙন রোধ করা না গেলে যেকোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যাবে ওই এলাকাগুলো। এদিকে ভাঙন ঠেকাতে সম্প্রতি সন্তোষজনক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে কাজীর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এই এলাকার অনেক মানুষ ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে চলে গেছেন। নদী পাড়ের অনেক গাছ কেটে নিয়ে গেছেন তারা। আবার অনেককে দেখা যায় উৎকণ্ঠা নিয়ে নদী পাড়ে বসে রয়েছেন।

ভাঙন রোধে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে এতেও ভাঙন রোধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় কৃষক হাজী মো. হযরত আলী বলছেন, আমাদের শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমাদের বাড়িঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের ঘরের কাছে চলে এসেছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ছাড়া নদী ভাঙন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নদী ভাঙন রোধে অতি দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় স্কুল কমিটির সদস্য আল আমিন বলেন, আমাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে। জমিতো গেছেই, এখন শুধু বাড়িঘর টুকু আছে। তাও ভাঙার মুখে আছে। এই নদী ভাঙন কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বিশেষ আবেদন। এটা যেন দ্রুত সংস্কার করতে পারে।

কৃষক চাঁন মিয়া হাজী বলেন, এই ভাঙার পরেও যদি আমার বাড়িঘরটুকু রক্ষা করা যায়। সারাদিন মাঠে কাজ করি। কাজ করে মাথার নিচে যদি ছাদ না থাকে আমরা থাকব কোথায়? তিনি বলেন, আমাদের বিশাল সমস্যা। সরকারের কাছে আকুল আবেদন, যত দ্রুত এই কাজটা সরকার যেন করে দেয়।

নদী তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন একই এলাকার মিয়াজ উদ্দিন নামে একজন বৃদ্ধ কৃষক। নদী ভাঙন নিয়ে এই প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলেই তিনি কেঁদে ফেলেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আগে এখানে নদীর কিনারে যার যা জায়গা জমি ছিল সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট আমাদের ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি সবই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা যাব কোথায়? কারো সাথে আর কারো দেখা হবে না। এ সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন আমাদের এইটার যেন ব্যবস্থা করেন।

একই গ্রামের হযরত মাওলানা আব্দুস সালাম ওয়েসী বলেন, আমাদের এখানে গত ৮-১০ দিন পূর্ব থেকে ভাঙনটা বেড়ে গেছে। এখান থেকে নদীর দূরত্ব ছিল প্রায় ৫০০ মিটার । সেই নদী ভাঙতে ভাঙতে ৩০০ মিটারও আর নেই। আমরা এখানে দ্রুত স্থায়ী সমাধান চাই।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সাহেদ বলেন, ধনাগোদা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়া কাজীর বাজার এলাকাটি গত ৩ দিন পূর্বে পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। ভাঙন রোধে বরাদ্দ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

 

একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে

Shwapno
Link copied!