AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ০৭ মে, ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

হাঁস পালনে প্রতিবন্ধী আনোয়ারের জয়যাত্রা,দুই মাসে আয় তিন লক্ষ টাকা


Ekushey Sangbad
আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই, জয়পুরহাট
০৬:২৯ পিএম, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

হাঁস পালনে প্রতিবন্ধী আনোয়ারের জয়যাত্রা,দুই মাসে আয় তিন লক্ষ টাকা

আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। সে কালাই উপজেলার আঁওড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার জম্ম একই উপজেলার পুর গ্রামে হলেও ছোটবেলা থেকেই সে তার মামার বাড়ি আঁওড়া সোনাপাড়া গ্রামে বড় হয়েছে। অভাব-অনটনের সংসার। জীবনের প্রতিকূলতার সাথেই প্রতিদিন যুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন। ২০০৪ সালে,বাবার দেওয়া কিছু টাকা দিয়ে মাত্র ৮টি হাঁস কিনে শুরু করেন হাঁস পালনের যাত্রা। ছোট্ট উদ্যোগ কিন্তু বুকভরা স্বপ্ন। একদিন সেই হাঁস ডিম দেওয়া শুরু করে, আর সেখান থেকেই আনোয়ারের নতুন যাত্রা।ডিম থেকে বাচ্চা ওঠানো,ধীরেধীরে খামারের প্রসার। মিস্ত্রীর কাজের পাশাপাশি এই ছোট্ট উদ্যোগই হয়ে ওঠে তার জীবনের নেশা,আর এখন সেটাই তার মূল পেশা।

প্রায় ২০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা এই হাঁসের খামার আজ আনোয়ারের জীবনের বড় অবলম্বন। কিন্তু সুখের দিনগুলো খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২০১১ সালে মিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে ভেঙে যায় তার পা। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। পা ভাঙার পর অনিশ্চিত হয়ে পড়ে সংসার। তবে হাল ছাড়েননি আনোয়ার,তার পাশে ছিলেন স্ত্রী মর্জিনা। মর্জিনার সহায়তায় আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন আনোয়ার। প্রতিবন্ধিতার বাধা পেরিয়ে আজ তিনি প্রতিবছর ৭০-৭৫ দিনের জন্য হাঁস পালন করেন,যা থেকে আসে ব্যাপক আয়।

আনোয়ারের ভাষায়,"পা ভাঙার পর যখন সুস্থ হলাম, তখনো সংসার টলমল অবস্থায় ছিল। এসময় আমার শ্যালিকা ৪০টি হাঁসের বাচ্চা পাঠায়,সেখান থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করি। ধীরে ধীরে হাঁসের সংখ্যা বাড়াতে থাকি।অনেকেই বারণ করেছিল কিন্তু আমি থামিনি। মিস্ত্রীর কাজের পাশাপাশি এই হাঁস পালনই আমার বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে উঠলো।"

আনোয়ার আরও বলেন,"যখন মাঠ ফাঁকা থাকে, তখন হাঁস পালন করলে খুব ভালো লাভ হয়। গত বছর ১২শ’ বাচ্চা কিনে ৭০ দিনে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা লাভ করি।এ বছর খাকি ক্যাম্বেল জাতের ২৮শ’ বাচ্চা তুলেছি এর মধ্যে ৩ লক্ষ টাকার হাঁস বিক্রি করেছি, এবং বাকিগুলো থেকেও আরও ২ লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছি।"

এই সাফল্যের পেছনে আনোয়ারের কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস রয়েছে। ২৮শ’ বাচ্চাসহ খামারের সব খরচ ছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, ৬৫-৭০ দিনে প্রতিটি বাচ্চার ওজন হয়েছে ৮০০-১০০০ গ্রাম। বর্ষা মৌসুমে মাঠ ফাঁকা থাকলে হাঁস পালনের জন্য খরচ কম হয় এবং লাভ বেশি হয় বলেও জানান তিনি।

কিন্তু আনোয়ারের দুঃখের জায়গা একটাই—সরকারি সহায়তার অভাব। তিনি বলেন,"প্রতিবন্ধী হিসেবে অনেক কষ্টে খামারটি গড়ে তুলেছি। যদি সরকারি সাহায্য পেতাম,তাহলে খামারটিকে আরও বড় করতে পারতাম,হয়তোবা অনেকের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হতো।"

উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ হাসান আলী জানান,"ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ খামারিদের জন্য সরকারি কিছু সুবিধা থাকলেও আর্থিক সাপোর্ট দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে খামারিদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এনে ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলনের জন্য সুপারিশ করা যেতে পারে।"
 

একুশে সংবাদ/এনএস

Shwapno
Link copied!