স্থূলকায় সন্তানের খাদ্য যোগাতে বাবার কিডনি বিক্রি!
একুশে সংবাদ : সন্তানের অস্বাভাবিক স্বাস্থ্য কমানোর জন্য নিজের কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রমেশভাই নন্দোয়ানা। চার সন্তানের মধ্যে তিন সন্তানই অস্বাভাবিক মোটা। চাইল্ড ওবেসিটির শিকার সন্তানদের চিকিৎসার খরচ জোগানের সাধ্য নেই তার। নিজের কিডনি বেচে তাই সন্তানদের বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
৫ বছরের যোগীতা রমেশভাই নন্দোয়ানা, ৩ বছরের অনিশা ও ১৮ মাসের হর্ষ বিশ্বের সব থেকে মোটা শিশুদের তালিকায় রয়েছে। তাদের ওজন যথাক্রমে ৩৪ কেজি, ৪৮ কেজি ও ১৫ কেজি। তাদের ১ সপ্তাহের খাবার দিয়ে যে কোনও পরিবারের ২ মাসের খাবারের যোগান হতে পারে।
যেটা বহন করা নন্দোয়ানার জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সন্তানদের চিকিৎসার স্বার্থে তাই নিজের কিডনি বেচার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩৪ বছরের গরিব এই বাবা। তিনি বলেন, আমার সন্তানরা যদি এই হারে বাড়তে থাকে তাহলে ওদের বড় অসুখ দেখা দেবে। ভয় পাচ্ছি ওরা একদিন এভাবে মরে যাবে।
যোগীতা ও অনিশা প্রতিদিন ১৮টি রুটি, ৩ পাউন্ড ভাত, ২ বাটি ডাল, ৬ প্যাকেট চিপস, ৫ প্যাকেট বিস্কুট, ১২টি কলা ও ১ লিটার দুধ খায়। সন্তানদের খাবার তৈরি করতে সারাদিনই রান্নাঘরে কাটে তাদের মা প্রজ্ঞা বেনের। তিনি জানালেন, আমি প্রতিদিন সকালে ৩০টা রুটি ও এক কেজির সবজি রান্না করি। এরপর সারাদিনের রান্না করতেই আমার সময় কেটে যায়। ওদের ক্ষুধা কখনও থামে না। সারাদিন খাওয়ার জন্য কাঁদে। আমরা ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু তারা বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে যা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। মাসে মাত্র ৩০০০ টাকা রোজগারে সংসার চলে নন্দোয়ানা পরিবারের।
রমেশভাই আরো জানান,"যোগীতা যখন জন্মায় তখন ওর ওজন ছিল মাত্র ১.৫ কেজি। খুব দুর্বল ছিল। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। তাই প্রথম ১ বছর আমরা ওকে প্রচুর খাওয়াতাম। তার ফলে ১ বছর বয়সে ওর ওজন দাঁড়ায় ১২ কেজি।" ঠিক একইভাবে ১ বছর বয়সে অনিশার ওজন দাঁড়ায় ১৫ কেজি। যখন ছেলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে তখন নন্দোয়ানা দম্পতি বুঝতে পারেন কঠিন রোগে আক্রান্ত তার সন্তানেরা। ওজনের কারণে বেশি নড়াচড়া করতে না পারায় স্কুলে যেতে পারে না নন্দোয়ানা শিশুরা। সারাদিন বাড়িতেই থাকে তারা।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৪-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :