ইরানের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখা উচিত: ওবামা
একুশে ডেস্কঃ একটি স্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছুতে হলে ইরানের তাদের পারমাণবিক কার্যক্রমটি আগামী এক দশক ধরে স্থগিত রাখা উচিত বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ও্রবামা। পাশাপাশি ইরানের এই কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েলি তৎপরতারও সমালোচনা করেছেন তিনি।
এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ছয় জাতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তেহরান।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ওপর চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে এখনো বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে । তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হলে তেহরান সরকারকে এর কার্যক্রম কমপক্ষে ১০ বছর স্থগিত রাখতে হবে।
এদিকে এ চুক্তির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার জন্য ইতিমধ্যে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।মঙ্গলবার তার মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করছে ইসরায়েল। এ নিয়ে সোমবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে ওবামা বলেন, গত বছরও এ চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন নেতানিয়াহুর। তার এ ধরনের বিরোধিতাকে ভুল পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে ওবামা বলেন, ‘সম্ভাব্য এ চুক্তিটি ভয়াবহ হবে বলে দাবি করেছেন নেতানিয়াহু । এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থ ছাড় পাবে ইরান। কাজেই তেহরান সরকারের পক্ষে এ চুক্তির শর্তাবলী এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবেনা।’
ইরানের পরমাণু কার্যক্রম সম্পর্কে তেলআবিব এবং তেহরান দু পক্ষের কেউই সঠিক অবস্থানে নেই বলেও উল্লেখ করেছেন ওবামা। তিনি আরো বলেন ‘আমরা দেখেছি ইরান তাদের কর্মসূচিতে অগ্রসর হতে পারেনি। তারা এর প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।’ তবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের মধ্যে সৃষ্ট মতবিরোধ দু দেশের সম্পর্ককে ‘স্থায়ীভাবেধ্বংস’ করতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন ওবামা।
মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহু যে বক্তব্য রাখতে যাচ্ছেন তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে ওবামা প্রশাসনের। রিপাবলিকান দলের স্পিকার জন বোহেনার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে এ বক্তব্য রাখার জন্য নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক দলের নেতারা। হোয়াইট হাউজের সঙ্গে পরামর্শ না করেই নেতানিয়াহুর ভাষণের পরিকল্পনা করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাস হপ্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এটি বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে তৎপরতা চলছে তার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা সুসান রাইস।
অন্যদিকে রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাও। তিনি বলেন, চুক্তির মাধ্যমেই ইরানের পরমাণু সঙ্কটের সমাধান করতে হবে। কোনোরকম সামরিক অভিযান কিংবা অর্থনৈতিক অবরোধ এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
ইরানকে তাদের পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে দেশটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে ৬ জাতি অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন। এ কর্মসূচি বন্ধ রাখতে সম্মত হলে ইরানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।
এ নিয়ে তেহরান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিয়ের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন জন কেরি। আগামী ৩১ মার্চ চুক্তির কাঠামোগত বিষয়ে দু পক্ষের সম্মত হওয়ার কথা রয়েছে। চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে ৩০ জুন।
একুশে সংবাদ ডটকম/এইচ কে এস/০৩.০৩.১৫।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :